
মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার
আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আযহায় কোরবানির জন্য দেশেই পর্যাপ্ত গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, দেশে উৎপাদিত গবাদিপশুর সংখ্যা চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি। ফলে এবছর কোনো গবাদিপশু আমদানির প্রয়োজন হবে না।
রোববার (৪ মে) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন তিনি। এসময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ফরিদা আখতার জানান, এবছর কোরবানিযোগ্য মোট গবাদিপশুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৭টি। এর মধ্যে রয়েছে—
-
গরু ও মহিষ: ৫৬ লাখ ২ হাজার ৯০৫টি
-
ছাগল ও ভেড়া: ৬৮ লাখ ৩৮ হাজার ৯২০টি
-
অন্যান্য প্রাণী: ৫ হাজার ৫১২টি
তিনি বলেন, “চাহিদা পূরণের পর ২০ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি গবাদিপশু উদ্বৃত্ত থাকবে বলে ধারণা করছি। ফলে বিদেশ থেকে পশু আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই। আমাদের দেশীয় খামারিরাই এই প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম।”
সরকার কেবল গবাদিপশু সরবরাহ নিশ্চিত করেই থেমে থাকেনি। স্টেরয়েড ও হরমোন ব্যবহার বন্ধে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। উপদেষ্টা বলেন, “এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ২৬৩টি খামার পরিদর্শন করে হরমোনের কুফল সম্পর্কে খামারিদের সচেতন করা হয়েছে।”
এছাড়াও—
-
৮৩ হাজার ৬৫৬ জন খামারিকে প্রশিক্ষণ প্রদান
-
৬ হাজার ৬০০টি উঠান বৈঠক
-
২ লাখ ৭৪ হাজার ৩৭৮টি লিফলেট ও পোস্টার বিতরণ করা হয়েছে
তিনি আরও বলেন, “গবাদিপশু যাতে স্বাস্থ্যবান হয় এবং ক্রেতারা যেন নিশ্চিত হয়ে পশু কিনতে পারেন, সে লক্ষ্যে আমরা বিজ্ঞানসম্মত হৃষ্টপুষ্টকরণ প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছি।”
ঈদকে কেন্দ্র করে পশুবাহী ট্রাক ছিনতাই ও হয়রানি রোধে প্রশাসনের বিভিন্ন শাখা একযোগে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “বিজিবি, বাংলাদেশ পুলিশ, জেলা প্রশাসন এবং প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা যৌথভাবে কাজ করবে। পশুবাহী যান চলাচল যাতে নির্বিঘ্ন হয় তা নিশ্চিত করতে মহাসড়কে বিশেষ নজরদারি থাকবে।”
এছাড়া, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (হটলাইন: ১৬৩৫৮) খোলা থাকবে। যেকোনো সমস্যা বা হয়রানির অভিযোগ এ নম্বরে জানানো হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পশুর বাজারে অস্থিতিশীলতা ও দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ চাঁদাবাজি। এ বিষয়ে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ফরিদা আখতার বলেন, “চাঁদাবাজির কারণে যেন পশুর দাম বেড়ে না যায়, সেজন্য আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করেছি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনের শেষদিকে ফরিদা আখতার বলেন, “আমাদের দেশের উৎপাদিত গবাদিপশুই যথেষ্ট। পশুর দাম যাতে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে তা নিয়েও খামারিদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমরা একটি নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও আনন্দময় কোরবানির ঈদ উদযাপনের প্রত্যাশা করছি।”