
রেললাইনের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক বৃদ্ধ হঠাৎ করেই চলন্ত ট্রেনের সামনে শুয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন। গত সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার আড়ানী রেলস্টেশন এলাকায় এই অপমৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে।
যার একটি ভিডিও এরইমধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
এরপর থেকে হৃদয়বিদারক এমন ঘটনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ফেসবুকের কমেন্টস সেকশনে গিয়ে প্রশ্ন করছেন অসংখ্য উৎসুক মানুষ।
সেই সূত্র ধরে ওই বৃদ্ধের পরিচয় মিলেছে। মিলেছে তার অপমৃত্যুর কারণও।
চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করা ওই বৃদ্ধের নাম রুহুল আমিন (৬০)। তিনি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের মাঝপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
ঘটনার পর প্রাথমিক তদন্ত শেষে পুলিশ জানিয়েছে, ষাট বছরের বৃদ্ধ রুহুল আমিন ঋণে জর্জরিত ছিলেন। তিনি ঋণ করে সেই টাকা কোনোভাবেই পরিশোধ করতে পারছিলেন না। তাই তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ থাকলেও ঋণের চাপে প্রচণ্ড মানসিক অশান্তিতে ভুগছিলেন। আর এই কারণে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
ঈশ্বরদী জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান জানিয়েছেন, গত সোমবার সকাল থেকেই আড়ানী রেলস্টেশনে বসেছিলেন রুহুল আমিন নামের ওই বৃদ্ধ। বিকেলে রাজশাহীগামী বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেন আসার ঘোষণা দেন রেলস্টেশন মাস্টার। আর ট্রেন আসার ঘোষণা শুনে তিনি স্টেশনের পূর্বপাশে গিয়ে অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে ট্রেনের ইঞ্জিন প্লাটফর্মে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে তিনি তার নিচে ঝাঁপ দেন। এতে বুকের নিচ থেকে দ্বিখণ্ডিত হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
ওসি জানান, তার পরিবার জানিয়েছে স্থানীয় একটি এনজিও থেকে পেঁয়াজ চাষের জন্য তিন লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন রুহুল আমিন। কিন্তু নিম্নমানের বীজের কারণে পেঁয়াজ হয়নি। এরপর থেকেই ঋণের টাকা পরিশোধ করার দুশ্চিন্তায় মানসিক অশান্তিতে ভুগছিলেন ওই বৃদ্ধ। তাই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- ঋণের টাকা পরিশোধের চাপেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে গতকাল মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান, এই পুলিশ কর্মকর্তা।