
রক্ত সংক্রমণ ও ফুসফুসের জটিলতায় মৃত্যু, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে শোকের ছায়া
মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের ১৭তম আবর্তনের মেধাবী শিক্ষার্থী তিন্নি আক্তার রক্ত সংক্রমণ ও ফুসফুসের মারাত্মক জটিলতায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
অসুস্থতা ও চিকিৎসার ইতিহাস
তিন্নি দীর্ঘ ৪ মাস ধরে জ্বর ও শারীরিক দুর্বলতায় ভুগছিলেন। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় চিকিৎসকরা তাঁর হৃদরোগজনিত সমস্যা শনাক্ত করলেও, পরবর্তীতে তাঁর ফুসফুসের গুরুতর ক্ষতি ধরা পড়ে। গতকাল ভোড় তাঁর অবস্থা আকস্মিকভাবে অবনতি হলে তাকে ঢাকার মহাখালীর একটি হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের সকল প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সন্ধ্যায় তিনি মারা যান।
তিন্নির চাচাতো ভাই আফজাল হোসেন জানান, অসুস্থতার শুরুতে তাঁকে নরসিংদীর স্থানীয় হাসপাতাল ও কবিরাজি চিকিৎসা দেওয়া হলেও, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শোকের প্রতিক্রিয়া
তিন্নির মৃত্যুসংবাদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ ও সহপাঠীদের মধ্যে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিভাগের ১৬তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ইয়াসিন পাঠান সৈকত বলেন, “পরীক্ষার সময়ও তিন্নি একবার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, তবে তখন তাঁর অবস্থা এতটা গুরুতর ছিল না। সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যুসংবাদে আমরা সবাই হতবাক।”
আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আলী মোরশেদ কাজেম শোক প্রকাশ করে বলেন, “তাঁর অসুস্থতার বিষয়টি বিভাগে বিস্তারিত জানানো হয়নি। এমন মেধাবী ও অপরিণত বয়সে একজন শিক্ষার্থীর চলে যাওয়া আমাদের সকলের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি। আমরা তাঁর আত্মার শান্তি ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।”
শেষকৃত্য ও শোকজ্ঞাপন
তিন্নির মরদেহ আজ সকালে নরসিংদীর পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তাঁর সহপাঠী ও শিক্ষকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোকবার্তা প্রকাশ করে বলেছেন, “তিন্নি ছিলেন অত্যন্ত মিশুক ও পরোপকারী। তাঁর অভাব কখনোই পূরণ হবার নয়।”
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আগামীকাল বিশেষ দোয়া ও স্মরণসভার আয়োজন করার কথা বিবেচনা করছে।