
মোহাম্মদ মাহামুদুল হাসান কালাম।
বর্তমানে আমাদের কলেজের মাঠ ব্যবহার নিয়ে একটি জটিল ও স্পর্শকাতর সমস্যা তৈরি হয়েছে।বিভিন্ন চাপের কারণে হোক কিনবা নিজ ইচ্ছে কলেজ অধ্যাপক ও স্থানীয় কিছু কুচক্রীমহল মাঠে গ্রামের আমাদের ছেলেদের খেলা বন্ধ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন,যা নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম হয়েছে।
একদিকে কলেজের মাঠ শিক্ষার্থীদের একান্ত অধিকারের স্থান। এখানে তারা খেলাধুলা করে, শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটায়, সহপাঠ্য কার্যক্রমে অংশ নেয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ অন্য কাজে ব্যবহৃত হলে শিক্ষার্থীরা প্রভাবিত হয়, নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এবং কখনো কখনো শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়।
অন্যদিকে গ্রামের বাস্তবতাও আমাদের অস্বীকার করা উচিত নয়। অনেক গ্রামে খেলার জন্য আলাদা কোনো মাঠ নেই। সেক্ষেত্রে কলেজ মাঠ হয়ে ওঠে একমাত্র আশ্রয়স্থল। তাই কলেজ এর আশেপাশের ও গ্রামের ছেলেরা সেখানে খেলাধুলা করতে চায় — এটা একধরনের বাধ্যবাধকতা।
একতরফা নিষেধাজ্ঞা শুধু ক্ষোভ আর বিভেদের জন্ম দেবে।”
কারণ, যেকোনো সমস্যা যদি কেবল শাসনের মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে সেটা সমাধানের চেয়ে নতুন সমস্যা তৈরি করে। আলোচনার মাধ্যমে, সম্মানের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিলে তবেই স্থায়ী সমাধান সম্ভব।
তবে সমাধান একটাই — দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ও সমঝোতা। কলেজ কর্তৃপক্ষ চাইলে একটি সময়সূচি নির্ধারণ করে শিক্ষার্থীদের বাইরে গ্রামীণ যুবকদের একটি নির্দিষ্ট সময়ে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারে। এতে সবাই উপকৃত হবে, এবং মাঠও সুসংগঠিতভাবে ব্যবহৃত হবে।
অন্যথায় একতরফা নিষেধাজ্ঞা শুধু ক্ষোভ আর বিভেদের জন্ম দেবে।
খেলাধুলার কারণে যুবসমাজ মাদক থেকে দূরে থাকতে পারে, এবং এর পেছনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ আছে:
১. সময় ও মনোযোগ ব্যস্ত থাকে
যুবকরা যখন নিয়মিত খেলাধুলায় অংশ নেয়, তখন তাদের সময়, শক্তি, এবং মনোযোগ খেলাধুলার দিকেই থাকে। এতে তারা মাদক বা খারাপ সঙ্গের দিকে খুব সহজে যেতে পারে না।
২. শরীরচর্চা ও সুস্থতা নিয়ে সচেতনতা বাড়ে
খেলোয়াড়রা জানে মাদক শরীরের ক্ষতি করে। ভালো পারফরম্যান্সের জন্য সুস্থ শরীর দরকার — ফলে তারা মাদক থেকে দূরে থাকে।
৩. শৃঙ্খলা ও দায়িত্ববোধ তৈরি হয়
খেলাধুলা যুবসমাজকে নিয়ম মেনে চলা, সময় মেনে চলা এবং দায়িত্ব নেওয়ার অভ্যাস শেখায়। এই অভ্যাসগুলো মাদকবিরোধী জীবনযাপনে সাহায্য করে।
৪. পজিটিভ সামাজিক বন্ধন গড়ে ওঠে
একই দলে খেলার মাধ্যমে যুবকেরা একে অপরের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তোলে, যা মানসিক শক্তি জোগায় এবং একাকিত্ব বা হতাশা থেকে রক্ষা করে — যেগুলো অনেক সময় মাদকের দিকে ঠেলে দেয়।
৫. আদর্শ গড়ে ওঠে
অনেক খেলোয়াড় বা কোচ হয় অনুপ্রেরণাদায়ক আদর্শ। তাদের জীবন দেখে অনেকেই ভালো পথে থাকতে উৎসাহ পায়।