
ইসরাইলি গণহত্যা রুখতে নতুন করে মুসলিম জাতিসংঘ ও ‘অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন’ (ওআইসি) ভুক্ত ৫৭টি মুসলিম দেশ নিয়ে ইসলামিক আর্মি গঠন করা সময়ের অনিবার্য দাবী বলে মন্তব্য করেছেন মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের বর্তমান পীর, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) চেয়ারম্যান ও পার্লামেন্ট অব ওয়ার্ল্ড সুফিজ প্রেসিডেন্ট হযরত শাহসুফি ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী আল মাইজভান্ডারী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী।
সোমবার (৭ই এপ্রিল) চট্টগ্রামের পটিয়া কোলাগাঁও ছবির মার্কেট সংলগ্ন ফরচুন শীপ ইয়ার্ড ময়দানে কোলাগাঁও সুন্নী সমাজ কল্যাণ পরিষদ আয়োজিত সুন্নী মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, “সর্বজনবিদিত যে, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত বর্বরোচিত হামলায় প্রতিদিন অসংখ্য নিরীহ নারী, শিশু ও বেসামরিক মানুষ নিহত এবং আহত হচ্ছেন—যা বিশ্ব বিবেককে স্তব্ধ করে দিয়েছে।
শুধুমাত্র গত এক বছরে গাজায় শহীদ হয়েছেন ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ—এটি নিঃসন্দেহে ইতিহাসের ভয়াবহতম মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি দৃষ্টান্ত। অথচ মানবাধিকারের বুলি আউড়ানো যুক্তরাষ্ট্র নির্লজ্জভাবে সন্ত্রাসী ইসরাইলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত জাতিসংঘও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।
“বিশ্বব্যাপী মুসলিম জাতিসত্তা নিধনে কট্টরপন্থী ইহুদী নাসারারা গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত জানিয়ে সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী বলেন, ফিলিস্তিনের মজলুম গাজাবাসীর ওপর সন্ত্রাসী ইজরাইলের আগ্রাসন ও নারকীয় গণহত্যা রুখে দিতে হলে নতুন করে মুসলিম জাতিসংঘ ও ‘অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন’ (ওআইসি) ভুক্ত ৫৭টি মুসলিম দেশ নিয়ে ইসলামিক আর্মি গঠন করা সময়ের অনিবার্য দাবী।
“বাংলাদেশ সরকার কে অবিলম্বে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিষয়টি ওআইসি-তে জোরালোভাবে উত্থাপন করে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে এর নিন্দা জানানোর দাবী জানিয়ে বিএসপি চেয়ারম্যান বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আহ্বান জানাতে হবে যাতে তারা গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আরও সক্রিয় হন এবং ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আদালতের আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। একইসাথে বাংলাদেশে ইসরায়েলি সব পণ্য রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ ও বয়কটেরও আহবান জানান তিনি।”
দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া সুখ শুকছড়ি দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন পীরে তরিকত আল্লামা নাছেরুল হক চিশতির সভাপতিত্বে সুন্নী মহাসম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন, দাওয়াতে ঈমানী বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা মুফতি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন তাহেরী। বিশেষ বক্তা ছিলেন, রাউজান গহিরা এফ.কে জামেউল উলুম কামিল মাদ্রাসার মোহাদ্দেস মাওলানা ফখরুদ্দীন আল কাদেরী, কর্ণফুলী সৈন্যারটেক হযরত সিদ্দিকে আকবর (রা.) আল কুরআন একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ এনামুল হক এনাম কাদেরী, কোলাগাঁও গাউছিয়া তৈয়্যবিয়া সুন্নীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দীন আল কাদেরী, শিক্ষক মাওলানা নূরুল ইসলাম সাইদারীসহ আরো অনেকেই।
মিলাদ কিয়াম শেষে মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ, দেশ ও বিশ্ববাসীর শান্তি-সমৃদ্ধি কামনায় আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী মাইজভান্ডারী।