নিজস্ব প্রতিবেদক, এএনবিটোয়েন্টিফোর ডট নেট 

কুমিল্লার লাকসামে স্বামীকে আটকে রেখে এক গৃহবধূকে দুই দফায় দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। নির্যাতিত গৃহবধূর বাড়ি নোয়াখালীতে।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী দম্পতির বরাতে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ওই দম্পতি লাকসামে তাদের আত্মীয়ের বাড়িতে আসেন। পরদিন ভোরে তারা লাকসাম বাইপাস মোড় থেকে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে একটি সিএনজিতে ওঠেন। এসময় সিএনজি চালক মো. মাসুদ তাদের স্বামী-স্ত্রী কিনা তা জানতে চান এবং সন্দেহ প্রকাশ করেন। এরপর পরিকল্পিতভাবে তিনি তাদের লাকসামের গন্ডামারা এলাকায় নিয়ে যান এবং তাদের ব্যাগ তল্লাশি করেন। পরে তিনি সহযোগীদের সহায়তায় দম্পতিকে পাশের লালমাই উপজেলার মগবাড়ি এলাকায় নিয়ে গিয়ে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে অপহরণ করে লাকসামে নিয়ে যান।

পুলিশ জানায়, ভিকটিমকে প্রথমে লাকসামের পাইকপাড়া এলাকায় সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের শ্যালক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত আলীর একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অভিযুক্ত মো. মাসুদ ও মোহাম্মদ আলী তাকে ধর্ষণ করে। পরে তাকে লাকসাম পৌর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তালুকদার ভিলায় আসামিদের পরিচিত বিলকিছ আক্তার কল্পনার ভাড়া বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে আবারও ধর্ষণের শিকার হন তিনি।

পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা রোববার (১৬ মার্চ) লাকসাম থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে দিনভর ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন: ১. মোহাম্মদ আলী (২৫), লাকসাম উপজেলার মনোহরপুর এলাকার মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে। ২. মো. মাসুদ (২৩), লাকসাম পৌরসভার শ্রীপুর মধ্যপাড়ার মো. মমিনের ছেলে। ৩. মনির হোসেন হৃদয় (২৩), বাতাখালী এলাকার আবু তাহেরের ছেলে। ৪. আল আমিন (২৩), উত্তর বিনই এলাকার মৃত ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে। ৫. বিলকিছ আক্তার কল্পনা (৪০), মধ্য লাকসাম এলাকার মৃত মোস্তাফিজ মজুমদারের স্ত্রী।

বর্তমানে নির্যাতিতা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, ‘ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ রোববার দিনভর অভিযান চালিয়ে ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার (১৭ মার্চ) তাদের আদালতে পাঠানো হবে।’