শাহজাহান বাশার,স্টাফ রিপোর্টার,এএনবি২৪ ডট নেট
চট্টগ্রাম: সুফীবাদ বা সূফীজম সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে হলে মাইজভান্ডার দরবার শরীফ পরিদর্শন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। শত শত বছর ধরে এই দরবার শরীফ শুধু ধর্মীয় উপাসনার কেন্দ্র নয়, বরং আধ্যাত্মিক জ্ঞানের এক বিশাল তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত। এখানে সাধনার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি, মানবপ্রেম এবং বিশ্বশান্তির আদর্শ প্রতিষ্ঠার শিক্ষা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় অবস্থিত মাইজভান্ডার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা গাউসুল আজম শাহ্সূফী হযরত সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী (ক.) ছিলেন উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুফী সাধক। তাঁর শিক্ষা ও আধ্যাত্মিক দর্শন আজও লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে আলো ছড়াচ্ছে। সুফীবাদের মূল প্রতিপাদ্য হলো আত্মশুদ্ধি, প্রেম, সহনশীলতা, মানবকল্যাণ এবং সত্য ও ন্যায়ের পথে চলা। মাইজভান্ডার দরবার শরীফ এই আদর্শের ধারক ও বাহক হিসেবে আজও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
সূফীবাদ ও মাইজভান্ডারের গুরুত্ব* সুফীবাদ এমন এক আধ্যাত্মিক ধারা, যেখানে মানুষের আত্মশুদ্ধি ও পরম সত্তার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এটি মূলত ভালোবাসা, সহানুভূতি এবং শান্তির বার্তা প্রচার করে। মাইজভান্ডার শরীফ এই দর্শনের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র, যেখানে বিভিন্ন সময় দেশ-বিদেশের অনুসারী ও গবেষকরা এসে আধ্যাত্মিক জ্ঞান আহরণ করেন। সুফী সাধকগণ বিশ্বাস করেন, প্রকৃত শান্তি ও মুক্তির জন্য মানুষকে তার অন্তরের দিকেই মনোনিবেশ করতে হবে। এই দর্শনকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার মাধ্যমে সমাজে ন্যায়বিচার ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত হয়। মাইজভান্ডারের সুফী সাধকগণ যুগ যুগ ধরে এই শিক্ষা দিয়ে আসছেন, যা বর্তমান বিশ্বেও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
প্রতি বছর হাজারো ভক্তের আগমন*প্রতিবছর দেশ-বিদেশ থেকে হাজার হাজার ভক্ত, অনুসারী ও গবেষক মাইজভান্ডার শরীফে আসেন সুফী সাধকদের দর্শন ও আধ্যাত্মিকতা উপলব্ধি করতে। বিশেষত ওরস শরীফ উপলক্ষে এই দরবারে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে, যেখানে তারা ইবাদত-বন্দেগি, জিকির-আসকার ও দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন।
এই দরবার শরীফে বিভিন্ন সময়ে দেশ-বিদেশের গবেষকরা এসে সুফীবাদের দর্শন নিয়ে গবেষণা করেন এবং এখানকার আধ্যাত্মিক পরিবেশের মাধ্যমে মানসিক প্রশান্তি খুঁজে নেন। তাদের মতে, মাইজভান্ডার শুধু একটি ধর্মীয় স্থান নয়, বরং আত্মশুদ্ধির এক মহাসড়ক। সুফীজম চর্চার আদর্শ কেন্দ্র*মাইজভান্ডার শরীফ শুধুমাত্র একটি ইসলামিক তীর্থস্থান নয়, বরং এটি সুফীবাদ চর্চার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। এখানকার সুফী সাধকগণ শিষ্যদের শেখান কিভাবে আত্মশুদ্ধি অর্জন করতে হয়, কিভাবে মানুষের সেবার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায় এবং কিভাবে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা যায়।
একজন গবেষক বলেন, *”যদি কেউ সুফীবাদ সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে চায়, তবে তার জন্য মাইজভান্ডার শরীফে যাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে এসে মানুষ প্রকৃত অর্থে বুঝতে পারে কীভাবে প্রেম, সহানুভূতি ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়।”**
সামাজিক কল্যাণমূলক কার্যক্রম*শুধু আধ্যাত্মিক দীক্ষা নয়, মাইজভান্ডার দরবার শরীফ সমাজসেবার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। দরবারের উদ্যোগে বিভিন্ন সময় গরিব ও দুস্থদের জন্য খাদ্য বিতরণ, চিকিৎসা সহায়তা, শিক্ষা কার্যক্রম এবং মানবসেবামূলক কাজ পরিচালিত হয়। দরবারের এই মানবিক উদ্যোগ গরিব-দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটায় এবং সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সুফীবাদের মূল লক্ষ্য হলো আত্মশুদ্ধি ও মানবতার সেবা। আর এই শিক্ষা লাভের জন্য মাইজভান্ডার দরবার শরীফ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। যুগ যুগ ধরে এই দরবার অসংখ্য মানুষকে আলোর পথ দেখিয়েছে এবং আধ্যাত্মিক প্রশান্তির কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। তাই সুফীবাদ জানতে চাইলে এবং প্রকৃত আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চাইলে মাইজভান্ডার দর্শন একান্ত জরুরি।
এএনবি২৪ ডট নেট"একটি বহুল পঠিত অনলাইন বাংলা সংবাদপত্র,
প্রকাশক, মোহাম্মদ মাহামুদুল হাসান কালাম,
প্রগতি স্বরণী, ঢাকা-১২২৯
+৯৬০৭৩৩৯৬৯১
+৮৮০১৬৪৭০৫৩৪৪৯
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ
ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন। anbnewsbd@gmail.com
২০১২-২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত – এএনবিটোয়েন্টিফোর ডট নেট