
মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার
দেশে অপরাধের প্রকৃতি এবং শাস্তির পদ্ধতিতে পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে একটি নতুন ধরনের অপরাধ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যা ‘মব জাস্টিস’ বা ‘সঙ্ঘবদ্ধ পিটুনি’ হিসেবে পরিচিত। ৫ আগস্টের পর এই ধরনের ঘটনার সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে, এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। মব জাস্টিসের একাধিক ঘটনা ইতোমধ্যেই ঘটেছে, যেখানে জনগণ নিজেদের হাতে আইন তুলে নিয়েছে এবং প্রাথমিক তদন্ত ছাড়াই অপরাধী ঘোষণা করে তাদের উপর আক্রমণ চালিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন যে, রাজনৈতিক দলের কিছু গোষ্ঠী বিশেষভাবে আওয়ামী লীগের দোসররা এই মব সৃষ্টির পেছনে রয়েছে। এই গোষ্ঠীটি একটি পরিকল্পিত কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এর পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছুটা অবহেলা এবং সরকারী সিদ্ধান্তের অস্পষ্টতা কাজ করছে, যার ফলে অপরাধীরা এই ধরনের সংঘবদ্ধ হামলার সুযোগ পাচ্ছে।
মব গঠনের পিছনে যে অশুভ পরিকল্পনা কাজ করছে, তা অপরাধ বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি গোয়েন্দা রিপোর্টেও উঠে এসেছে। তাদের মতে, সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে এই অপরাধী গোষ্ঠীগুলি তাদের কার্যক্রম চালাতে না পারে। বিশেষ করে, পুলিশ বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যদের প্রতি অবহেলা কিংবা রাজনৈতিক চাপের কারণে তারা কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এর ফলে, সঙ্ঘবদ্ধ পিটুনির প্রবণতা বাড়ছে এবং অপরাধীরা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে জনতাকে ভয় দেখাচ্ছে।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এবং সরকারের পক্ষ থেকে যে তথ্য আসছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সঙ্ঘবদ্ধ পিটুনির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী এবং অন্যান্য বড় শহরগুলোতে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঢাকায় সর্বোচ্চ সাতজন মারা গেছেন মব জাস্টিসের শিকার হয়ে, যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
এছাড়া, মব জাস্টিসের কারণে আইন-শাসনের দুর্বলতা এবং অপরাধীদের আইনের আড়ালে থেকে সजा না পাওয়ার কারণেই অপরাধীরা সাহস পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পুলিশকে আরো কার্যকর এবং নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে, এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।