কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথ বন্ধ করে দিয়ে কাঁচা বাজার স্থাপন করায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিনই বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার সময় তাদের এ ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও এ ব্যাপারে কোনো সুরাহা না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই চলছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতায়াত।
জানা গেছে, উপজেলার পৌর সদরের আলহাজ¦ আব্দুল করিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রবেশ দ্বার সংকুচিত করে প্রভাবশালী মহল কর্তৃক কাঁচা বাজার স্থাপন করা হয়েছে। চৌদ্দগ্রাম বাজারে আলাদা হাঁস-মুরগি ও মাংশ বিক্রির শেড থাকলেও বিদ্যালয়ে প্রবেশ মুখেই বসানো হয়েছে হাঁস-মরগির বাজার। বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষেই বসানো হয়েছে খাসির মাংশের দোকান। এতে বিদ্যালয়ের যাতায়াতের পথটি প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। পরিবেশ দূষণের ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এ পথে যাতায়াতের সময় নাক বন্ধ করে চলতে বাধ্য হয়। দখলদারদের থাবায় সংকুচিত হতে হতে হারিয়েছে শিক্ষাঙ্গনের স্বাভাবিক রূপ। এমন বহুমুখী প্রতিবন্ধকতা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মাঝেই চলছে বিদ্যালয়টির নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম।
সরেজমিন গিয়ে আরও দেখা গেছে, চৌদ্দগ্রাম বাজারস্থ আলহাজ্ব এম. এ করিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতের পথে বিদ্যালয় দেয়াল ঘেঁষে বসানো হয়েছে শাক-সবজীর স্থায়ী দোকান। সরু এই পথটিতে দোকানগুলো এমন প্রসস্থ আকারে বসানো হয়েছে, যেখানে দুই একজন ক্রেতা দাঁড়ালে আর চলার মত পথ থাকেনা। বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীরা পথ ছেড়ে ভিন্ন রাস্তায় চলাচল করছে। বিদ্যালয়ের প্রবেশ মুখে বসানো হাঁস-মুরগির দোকান থেকে আসছে দুর্গন্ধ। প্রবেশ মুখের উত্তর পাশে বিদ্যালয়ের দেয়াল ঘেঁষে সারিবদ্ধভাবে ছাগল বেঁধে রাখা হয়েছে জবাইয়ের অপেক্ষায়।
সচেতন অভিভাবক ও স্থানীয়রা জানান, ১৯৯১ সালে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় এখানে কোনো বাজার ছিল না। ২০০২ সালে পৌরসভায় উন্নীত হওয়ার পর আলাদাভাবে কাঁচাবাজার, মাংস, ডিম ও অন্যান্য ব্যবসায়ীদের জন্য আলাদা শেড তৈরী করা হয়। বাজারের দক্ষিণ অংশে মাংসের দোকান। শাকসবজী ব্যবসায়ীদেরকে বাজারের উত্তর অংশে স্থানান্তর করা হয়। যার পূর্বদিকে বিদ্যালয়টির অবস্থান। উন্মুক্ত রাখা হয়েছিল বিদ্যালয়ে যাতায়াতের পথ। বর্তমানে শাকসবজি ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত জায়গা ব্যবহার করছেন গোডাউন হিসেবে। আর দোকান বসেছে চলাচলের পথে। চলাচলে প্রতিবন্ধকতার প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের সাথে বাক-বিতন্ডায় জড়ানোর কথা জানান কয়েকজন সচেতন অভিভাবক।
দখলদার দোকানীরা বলছেন, আমরা এই জায়গায় (রাস্তায়) দোকান বসানোর জন্য ভাড়া পরিশোধ করি। বাজারের ইজারাদার সাবেক পৌর কাউন্সিলর কাজী বাবুলের লোক এসে টাকা নিয়ে যায়।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিক বলেন, কাঁচা বাজার স্থানান্তরের পরও বিদ্যালয়ের সামনে হাঁস-মুরগির দোকান ছিল না। উন্মুক্ত ছিল যাতায়াতের পথ। প্রথম দিকে হাটের দিন একটি ঝাঁপি নিয়ে বসতো দোকানিরা। বিগত দেড়-দুই বছরে সেই দোকানিরাই রাস্তাজুড়ে বসিয়েছেন স্থায়ী দোকান। দোকান সরাতে প্রতিবাদ করেও কোনো কাজ হয়নি। কয়েক দফায় উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ করেও প্রতিকার মেলেনি। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও চলাচলে প্রতিবন্ধকতা থাকায় অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে যাচ্ছেন অন্যত্র। দুর্গন্ধের ফলে বিদ্যালয়ের উত্তরাংশে শিশু শ্রেণী ও তৃতীয় শ্রেণী কক্ষে পাঠদান বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল হুদা তালুকদার বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার সমন্নয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগীতায় দখলদারদেরকে উচ্ছেদ করে হবে। যাতে করে বিদ্যালয়ের পাঠদান পরিবেশ সুন্দর ও স্বাভাবিক হয়।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ জানান, ‘পৌরসভা কর্তৃপক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে আমাদের দল বাজার পরিদর্শন করেছে। এটি আইনি প্রক্রিয়াধীন। শীঘ্রই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এএনবি২৪ ডট নেট"একটি বহুল পঠিত অনলাইন বাংলা সংবাদপত্র,
প্রকাশক, মোহাম্মদ মাহামুদুল হাসান কালাম,
প্রগতি স্বরণী, ঢাকা-১২২৯
+৯৬০৭৩৩৯৬৯১
+৮৮০১৬৪৭০৫৩৪৪৯
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ
ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন। anbnewsbd@gmail.com
২০১২-২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত – এএনবিটোয়েন্টিফোর ডট নেট