
শায়েস্তাগঞ্জ গাউছিয়া মইনীয়া সাইফীয়া সুন্নীয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার দস্তারে ফজিলত উপলক্ষে সুন্নী মহাসম্মেলন সম্পন্ন।
হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ কদমতলী গাউছিয়া মইনীয়া সাইফীয়া সুন্নীয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার হিফজ শুনানি শেষ হওয়া হাফেজ শিক্ষার্থীদের দস্তারবন্দী উপলক্ষে ১ম বার্ষিক আজিমুশশান সুন্নী মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কুরআনুল কারিমের হিফজ সমাপ্ত করা ১৩ জন হাফেজকে দস্তারে ফজিলত ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, মাইজভাণ্ডার শরীফের সাজ্জাদানশীন ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) চেয়ারম্যান হযরত শাহসুফি ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী আল মাইজভান্ডারী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী।
এ সময় তিনি বক্তব্যে বলেন, শিক্ষার অন্যতম মূল উদ্দেশ্য নৈতিকতা অর্জন। শুধু বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানার্জন করে পেশাগত জীবনে ভালো করা কখনো শিক্ষার লক্ষ্য নয়। শিক্ষার্থীদের মাঝে অপরের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধাবোধ, সততা, ন্যায়পরায়ণতা, মানবতা ও দেশপ্রেম জাগ্রত করতে নৈতিক শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে৷ আমাদের প্রচলিত শিক্ষা কারিকুলাম এবং ব্যবস্থায় একজন শিক্ষার্থীর ওপর অনেক বিষয় পাঠ, পরীক্ষা, কোচিং ইত্যাদির প্রতি ঝোঁক দেখা যায়। এতে শিক্ষার্থীদের সহজাত চিন্তা, সৃজনশীলতার বিকাশ বাঁধাগ্রস্ত হয়।
বিএসপি চেয়ারম্যান আরো বলেন, নৈতিকতার অন্যতম প্রধান উৎস ধর্ম। ‘ধর্ম ও নৈতিকতা’ বিষয়টি পড়ানো হলেও, এ বিষয়টিকে শিক্ষার্থীরা এবং তাদের অভিভাবকরা সাধারণত কম গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তারা মনে করেন এর চেয়ে বিজ্ঞান, ইংরেজি, গণিত অধিক গুরুত্বপূর্ণ তার ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, নৈতিকতা, বিনয় অর্জন না করলে সে শিক্ষা মূল্যহীন। তার কাছ থেকে জাতি, সমাজ, রাষ্ট্র ভালো কিছু পায় না। বরং দুর্নীতি, অসৎ কার্যের মাধ্যমে এ ধরণের মানুষেরা দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তাদের মাধ্যমে মানবতা ভূলুণ্ঠিত হয়। সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী মনে করেন, সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ বিনির্মানে তাই শিশু ও তরুণ প্রজন্মের মাঝে নৈতিক গুণাবলি জাগ্রত করতে রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবারকে দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নিতে হবে।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মাওলানা শেখ সিরাজুল ইসলাম আল ক্বাদেরীর সভাপতিত্বে মাহফিলে প্রধান বক্তা ছিলেন, কুমিল্লা ঘিলাতলা দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন, পীরে তরিকত মাওলানা মুফতি বাকিবিল্লাহ্ আল আজহারী। বিশেষ আলোচক ছিলেন, মাওলানা রুহুল আমিন ভূইয়া চাঁদপুরী, মইনীয়া যুব ফোরাম কেন্দ্রীয় পরিষদের বিভাগীয় ধর্মবিষয়ক সম্পাদক, হাফেজ ক্বারী মাওলানা মুহাম্মদ কেরামত আলী, হাফেজ ক্বারী মাওলানা খাজা বাহাউদ্দীন মাইজভান্ডারী, মাওলানা মুজিবুর রহমানসহ আরো অনেকেই।
এ সময় মাদ্রাসার দাতা সদস্য খলিফা সোহেল আহমেদ মাইজভান্ডারী, মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মোহাম্মদ রাসেল, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মিলাদ কিয়াম শেষে মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ, দেশ ও বিশ্ববাসীর শান্তি-সমৃদ্ধি কামনায় আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী ওয়াল হোসাইনী আল মাইজভান্ডারী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী।