
আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া:
আড়াই মাস ধরে মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বাংলাদেশিকর্মী মাহবুব আলমকে (৪৮) বাঁচাতে প্রয়োজন প্রায় ১৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। পচনও ধরেছে মাহবুবের শরীরে। বিদেশে ব্যয়বহুল চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া তার পরিবারের সাধ্যের বাইরে।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত হাসপাতালে মাহবুবের বিল এসেছে প্রায় ১৩ লাখ টাকা। যতই দিন যাচ্ছে হাসপাতালের বিলের অংক বেড়েই চলছে। তবে এ টাকা পরিশোধ না করলে তার চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া মুশকিল। শুরুতেই আইসিইউতে রাখা হলেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে এইচডিডব্লিউতে রাখা হয়েছে।
চিকিৎসা অব্যাহত না রাখলে তাকে বাঁচানো সম্ভব নাও হতে পারে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে মাহবুবকে দেশে ফিরিয়ে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা জরুরি। কিন্তু মালয়েশিয়ার হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার সামর্থ্য পরিবারের নেই। একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটিকে বাঁচাতে, সরকার-বিত্তবানদের কাছে আকুতি জানিয়েছেন মাহবুবের ছোট্ট মেয়ে অধরা।
সম্প্রতি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর মালয়েশিয়া বাংলাদেশ ফোরাম অ্যাসোসিয়েশনের দায়িত্বশীলরা এগিয়ে এসেছেন। এ পর্যন্ত অ্যাসোসিয়েশনের কয়েকজন সদস্য প্রায় ৩ হাজার রিঙ্গিত সহযোগিতা করেছেন।
মালয়েশিয়ায় থাকা মাহবুবের ভাতিজা আনোয়ার হোসেন জানান, মাহবুব সাব-এজেন্ট নেওয়া এক মালয়েশিয়ানের অধীন কাজ করতেন। শুরুর দিকে সেই এজেন্ট কিছু সহযোগিতা করলেও এখন তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
রাওয়াংয়ে থাকা ভাতিজা আনোয়ার নিজেও একজন শ্রমিক। কাজের ফাঁকে চাচাকে দেখতে যান। নিজের সামান্য আয় থেকে এরই মধ্যে বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। আনোয়ার জানান, তার চাচার পরিবার খুবই অসহায়। তাদের পক্ষে সহযোগিতা করা সম্ভব নয়।
মাহবুবের স্ত্রী সীমা আক্তারের আবেদনের ফলে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ৮ হাজার রিঙ্গিত (বাংলাদেশি ২ লাখ টাকা) সহায়তা করে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।
অন্যদিকে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে প্রয়োজনীয় সবধরনের সহায়তা দিলেও হাসপাতালের বিপুল পরিমাণ বিল মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। হাসপাতালের বিল পরিশোধ ও মাহবুবকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হলে উড়োজাহাজ ভাড়া ও আনুষঙ্গিক খরচ বাবদ প্রায় ৮০ হাজার রিঙ্গিত প্রয়োজন।
এ অবস্থায় সরকারের বিশেষ উদ্যোগ আর বরাদ্দের আশায় রয়েছে মাহবুবের পরিবার। পাশাপাশি দেশ ও প্রবাসে থাকা বিত্তবানদের কাছেও সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
গত ২২ জুন মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর রাজ্যের শাহ আলম শহরের পানির পাইপ ঠিক করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন প্রবাসী মাহবুব। সেই থেকে স্থানীয় শাহ আলম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দুর্ঘটনায় প্রচণ্ড আঘাতে তার মুখের হাড় ভেঙে গেছে, ডান চোখ নষ্ট হয়ে গেছে ও শিরা ছিঁড়ে মাথার ব্রেইনের গুরুতর ক্ষতি হয়েছে।
২০১৬ সালে ওয়ার্ক পারমিটে পাম অয়েল বাগানে কাজ নিয়ে মালয়েশিয়ায় আসেন মাহবুব। পাম অয়েল বাগানের ভিসা শেষ হলে অবৈধ হন তিনি। তবে সরকারের রিক্যালিব্রেশন প্রক্রিয়ায় বৈধ হয়েছেন। মাহবুবের তিন মেয়ে ও স্ত্রী থাকেন গাজীপুর বোর্ডবাজারে একটি ভাড়া বাসায়। পুরো সংসার নির্ভরশীল মাহবুবের ওপর।
মালয়েশিয়ায় থাকা মাহবুবের ভাতিজা আনোয়ার বলেন, সবার একটু সহযোগিতায় হয়তো আমার চাচা বেঁচে ফিরবেন। তার অপেক্ষায় রয়েছে পুরো পরিবার। মাহবুব আলম সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে যোগাযোগ করতে পারেন +৬০১৬২৬৬২১৬২ নম্বরে।
অ্যাকাউন্ট নম্বর: ১৬২১৪৩১৮১২৫২
Anowar Hossain
May bank.