চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে চাঞ্চল্যকর ৮ বাস যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার ১৫নং আসামী, সাবেক রেলপথ মন্ত্রী ও কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো: মুজিবুল হক মুজিব এর ভাতিজা, ঠিকাদার মো: তোফায়েল হোসেন (৫০) কে বুধবার রাতে নিজ বাড়ী থেকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। সে উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের বসুয়ারা গ্রামের এমপি বাড়ীর মৃত আম্বর আলীর ছেলে এবং চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে তথ্যটি নিশ্চিত করে চৌদ্দগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জানান, আটককৃত তোফায়েল হোসেনের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রামে ৮ বাস যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা রয়েছে। তিনি ওই মামলার এজাহারভুক্ত ১৫নং আসামী। এছাড়াও তিনি কুমিল্লার কোতয়ালী থানায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে আরো একটি মামলার এজাহার নামীয় আসামী। মামলা হওয়ার পর থেকে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তোফায়েল হোসেনকে তার নিজ গ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের বসুয়ারার এমপি বাড়ী থেকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। আইনী প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
থানা সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রæয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুর এলাকায় ৮ ঘুমন্ত বাস যাত্রীকে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তৎকালীন সময়ে চৌদ্দগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক নুরুজ্জামান হাওলাদার বাদী হয়ে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহা. তাহেরকে প্রধান আসামী এবং বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে। গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর পুড়ে যাওয়া বাসের পরিচালক মো: আবুল খায়ের বাদী হয়ে সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হককে প্রধান আসামী করে ১৯০ জনের বিরুদ্ধে গত ১১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ৫নং আমলী আদালতে পৃথক আরো একটি মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, ঠিকাদার তোফায়েল হোসেন সাবেক রেলপথ মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে উপজেলা এলজিইডি’র সত্তর শতাংশ কাজ ভাগিয়ে নিতেন। এছাড়াও মন্ত্রী চাচার নাম ব্যবহার করে উপজেলার বিভিন্ন ক্ষেত্র হতে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি সহ নানান অপকর্মে জড়িত ছিলো সে।
আরও পড়ুন ঃ
উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন বন্ধ-চরম ভোগান্তিতে নিম্ন আয়ের মানুষ
ঘুষ, দুর্নীতির আয়ে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। নামে-বেনামে কিনেছেন জমি, ফ্লাট, ফ্লট। শত শত কোটি টাকা রয়েছে নিজ নামীয় অ্যাকাউন্ট সহ স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্টে। তার ক্ষমতার পাওয়ারে উপজেলা প্রশাসনের বড় বড় কর্মকর্তারা ভয়ে কাঁপতো সবসময়। ক্ষমতার অপব্যবহারে সে ছিলো উপজেলার স্বঘোষিত ত্রাস। তোফায়েল বাহিনী নামে ছিলো তার একটি নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী।
এএনবি২৪ডটনেট/মাহামুদুল