ভারতে মোটরসাইকেলে করে ভ্রমণে আসা এক ব্রাজিলিয়ান-স্প্যানিশ পর্যটককে সাতজন মিলে গণধর্ষণ করেছেন। এ ঘটনায় দেশটির পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ কর্মকর্তা পীতাম্বর সিং খেওয়ার জানিয়েছেন, ‘বাকিদের ধরতে একটা বিশেষ পুলিশ দল গঠন করা হয়েছে। দোষীরা যাতে কঠোর সাজা পায়, আমরা তা নিশ্চিত করব।’
গত শুক্রবার রাতে ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলায় ওই দম্পতির সঙ্গে এ ঘটনা ঘটে। ২৮ বছঠর বয়সি ভ্লগার ও তার ৬৪ বছর বয়সি স্বামী একটা ক্যাম্প করে থাকছিলেন। তারা গত কয়েক বছর ধরে মোটরসাইকেলে করে ঘুরছেন।
দুইজনই স্পেনের নাগরিক। পুলিশ তাদের রাত এগারোটা নাগাদ রাস্তার ধারে খুঁজে পায়। তাদের দেখে মনে হচ্ছিল যে, তাদের প্রবল শারীরিক নিগ্রহ করা হয়েছে। পুলিশ তাদের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের মেডিকেল পরীক্ষা হয়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
ইনস্টাগ্রামে এখন ডিলিট করা একটি ভিডিওতে দম্পতি বলেছিলেন, তাদের মারা হয়েছে এবং ওই নারী গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। গত কয়েক বছরে ওই দম্পতি বিশ্বের অনেকগুলি জায়গায় ঘুরেছেন। তারা তাদের অভিজ্ঞতার কথা সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন। তাদের দুই লাখ ৪০ হাজার ফলোয়ার আছে।
ওই দম্পতি স্পেনের একটি টেলিভিশনে বলেছেন, আক্রমণকারীরা স্বামীকে বারবার মারধর করে এবং স্ত্রীকে ধর্ষণ করে। তারা কোনো হোটেলে জায়গা পাননি বলে কাছে একটা জায়গায় ক্যাম্প করে ছিলেন। ওই নারী বলেন, তাকে কয়েকজন পালা করে ধর্ষণ করে। বাকিরা দূরে দাঁড়িয়ে দেখছিল। দুই ঘণ্টা ধরে এটা চলে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতে প্রতিদিন গড়ে ৮৬ জন নারী ধর্ষিতা হন। কিছু ধর্ষিতা কখনই তাদের উপর অত্যাচারের কথা পুলিশকে জানান না।
নারী অধিকার কর্মীদের অভিযোগ, ভারতের পিতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থাই এর জন্য দায়ী। তারা পুলিশ ও বিচারব্যবস্থাকে কাঠগড়ায় তোলেন। কারণ, বছরের পর বছর ধরে মামলা চলতে থাকে এবং খুব কমই শাস্তি হয়।
২০১২ সালে দিল্লির কুখ্যাত নির্ভয়া-কাণ্ড পুরো দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল, গোটা বিশ্বে আলোড়ন ফেলেছিল। ২৩ বছর বয়সি এক নারীকে বাসে ধর্ষণ করা হয়, পৈশাচিকভাবে মারা হয়, তারপর দেহ ফেলে দেয়া হয়। পরে অবশ্য অভিয়ুক্তদের ফাঁসি হয়। কেবল একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক অপরাধী জেল খাটার পর মুক্তি পায়।
সূত্র: ডিডাব্লিউ, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স