মালদ্বীপে অবৈধভাবে পরিচালিত ব্যবসার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ। অবৈধ ব্যবসা ট্র্যাক করার জন্য এটি একটি অভিযানের অংশ বলে জানিয়েছে তারা।
শনিবার (১৩ জুলাই) রাতে মালদ্বীপের রাজধানী মালে শহরের চারটি টেকওয়ে ক্যাফেতে অভিযান চালানো হয়েছে। এ সময় ৬ জন প্রবাসী পুরুষ এবং একজন মহিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আটক ব্যক্তিদের অভিবাসন আইনের অধীনে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।
অনিয়মিত বিদেশিদের সমস্যা সমাধানে বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। এ পর্যন্ত ১৮ শ’র বেশি বিদেশিকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে তারা।
এ দিকে এই অভিযানের বিরুদ্ধে প্রবাসীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের ভাষ্য, প্রবাসীদের অর্থে দেশ সচল থাকে। দেশকে সচল রাখতে নিজের জীবনের সকল সুখ বিলিয়ে দিয়ে তারা বিদেশের মাটিতে মুখ বুজে কাজ করে। কিন্তু যখন তারা কষ্টের উপার্জিত অর্থ কোনো দালালের কাছে দিয়ে প্রতারিত হচ্ছে বা কোনো কারণে তাদের কাজের ভিসা বা পারমিট নবায়ন করতে পারছে না এবং দেশে ফেরত গেলে বেকার হওয়ার ভয়ে বাধ্য হয়ে অবৈধভাবে থাকতে হয়, তখন সবাই তাদের ‘অবৈধ’ বলে ধিক্কার দেয়। ইমিগ্রেশন পুলিশ যখন ধরে নিয়ে জেল জরিমানা করে রাষ্ট্র তখন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে।
সম্প্রতি শত শত বিদেশিকে মালদ্বীপের ইমিগ্রেশন পুলিশ আটক করেছে। তাদের মধ্যে সিংহভাগ বাংলাদেশি নাগরিক বলে জানা গেছে। যদিও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা এখনও তাদের জাতীয়তা প্রকাশ করেনি। অভিযানে বৈধ-অবৈধ সবাইকেই আটক করা হচ্ছে। বৈধ প্রবাসীদের আটক করার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে তারা এক মালিকের লোক কিন্তু কাজ করছে অন্য জায়গায়। মালদ্বীপের আইন অনুযায়ী ওয়ার্ক পারমিট কার্ডধারী কেউ ব্যবসা করতে চাইলে ক্যাশ কাউন্টারে টাকা-পয়সা নিতে পারবে না। কিন্তু তারা তা করছে।
এ সব বিষয়ে মালদ্বীপে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন নীরব ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রবাসী বাংলাদেশীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বাংলাদেশ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী মুঠোফোনে বলেন, মালদ্বীপের আইনে যদি থাকে প্রবাসীরা এক জায়গার হয়ে অন্য জায়গায় কাজ করতে পারবে না, তাহলে এজেন্সিগুলোকে কেনো সরকার কোটা দিচ্ছে? যেখানে লোক লাগবে ৪০ জন সেখানে কোটা দিচ্ছে ৭০-এরও বেশি! মালদ্বীপের আইনে তো ইমিগ্রেশনকে ক্ষমতা দেওয়া আছে এজেন্সি অথবা মালিকদের মালদ্বীপের ৫০ হাজার রুপি জরিমানা করার কথা, এখন পর্যন্ত আমার দেখলাম না জরিমানা করতে। তার মানে কি আইন শুধু বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য?
মালদ্বীপের ইমিগ্রেশন হেফাজতে এবং জেলে আটক আছেন অনেকে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, দেশে ফেরার একটি বিমান টিকেটের জন্য মাসের পর মাস জেলে পরে আছে তারা। রাষ্ট্র কি তাদের খোঁজখবর নিচ্ছে? শুধু অবৈধ বলেই কি দায়িত্ব থেকে দূরে থাকছে? এ জন্য রাষ্ট্রকে অবশ্যই বিশেষ দায়িত্ব নিতে হবে