মালদ্বীপসহ যুক্তরাষ্ট্রের জাল সিল মেরে ভিসা,পাসপোর্ট জমা, ৬ জন গ্রেপ্তার।

মালদ্বীপ সহ বেশ কয়েকটি দেশে অবৈধ ভিসা দেওয়ার অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশ পুলিশ।

মালদ্বীপসহ আমেরিকার ভিসা নিয়ে জালিয়াতির ঘটনায় একটি চক্রের ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলছেন, চক্রটির অনেকেই বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির মালিক এবং এর সঙ্গে সম্পৃক্ত। ছয় জনকে গ্রেফতার করা হলেও আরও বেশ কয়েকটি ট্রাভেল এজেন্সি গোয়েন্দা পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে।

 

গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে, আমেরিকার ভিসা পাইয়ে দেওয়ার জন্য পাসপোর্টে বিভিন্ন দেশের ভিসা এবং ইমিগ্রেশনের জাল সিল লাগিয়ে পাসপোর্ট ‘ভারী করে’ একটি চক্র। পরে আমেরিকান দূতাবাসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভিসার জন্য আবেদন করে। যার সঙ্গে জড়িত ভিসা আবেদনকারী এবং প্রতারক চক্র; দুই পক্ষই। সিল নিয়ে সন্দেহ হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নেয় দূতাবাস। গুলশান থানায় দায়ের করা হয় একটি প্রতারণার মামলা। ১৮ জানুয়ারি মামলা দায়েরের পর গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে একটি প্রতারক চক্রের হদিস। এই চক্রটি বিদেশ গমনে ইচ্ছুক লোকজনের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা নিয়ে আমেরিকার ভিসা পাইয়ে দেওয়ার জন্য গত ৩ বছর ধরে এ ধরনের অপতৎপরতা চালিয়ে আসছিল।

 

ডিএমপি গোয়েন্দা সাইবার বিভাগ উত্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, যেকোনও দেশের ভিসা দেওয়া বা না দেওয়া সেটা সে দেশের এখতিয়ার। ভিসার আবেদনের জন্য যেসব কাগজপত্র জমা দেওয়ার প্রয়োজন হয়, সবাই ভিসা পাওয়ার জন্য সেসব কাগজপত্র জমা দিয়ে থাকেন। তবে একটি বিষয় প্রতারক চক্ররা প্রচার করে থাকে; সেটি হলো, আমেরিকার ভিসা আবেদন করতে হলে এর আগে বেশ কয়েকটি দেশ ঘোরার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এ বিষয়টিকে পুঁজি করে আমেরিকার ভিসা পাইয়ে দেওয়ার জন্য একেকজনের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা করে নিয়ে আসছিল চক্রটি। এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে জড়িত রাজধানীর বেশ কয়েকটি ট্রাভেল এজেন্সি। এরইমধ্যে দুটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিকসহ ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে জিজ্ঞাসাবাদে বেশ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেফতারকৃতরা গোয়েন্দা পুলিশকে জানায়, আমেরিকা গমনে ইচ্ছুকদের ভিসা নিশ্চয়তার জন্য একেকজনের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা করে নেওয়া হতো। আমেরিকার ভিসা প্রত্যাশীদের সম্মতিতে তারা প্রার্থীকে পাসপোর্টের গুরুত্ব বাড়াতে বিভিন্ন দেশের জাল ভিসা ও বিভিন্ন দেশের ইমিগ্রেশনের ইন ও আউটের জাল সিল নিজেরা তৈরি করে পাসপোর্টে সংযুক্ত করার পর আমেরিকান অ্যাম্বাসিতে ইন্টারভিউর ব্যবস্থা করতো। জাল সিল এবং জাল ভিসা পাসপোর্ট সংযুক্ত করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। কী পরিমাণ টাকা তারা হাতিয়ে নিয়েছে এবং এর পেছনে কারা জড়িত, এসব বিষয় খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, পাসপোর্টে কোনও জাল ভিসা কিংবা জাল সিল ব্যবহার করা বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে অপরাধ। সবাইকে এ ধরনের কাজে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। বিভিন্ন দেশে যাতায়াত করার কারণে আমেরিকান দূতাবাস আমেরিকার ভিসা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা দেয় না। আমেরিকার ভিসা পাওয়ার লক্ষ্যে সবসময় সঠিক তথ্য উপস্থাপন করতে হবে। মিথ্যা তথ্য প্রমাণ হলে তা গুরুতর অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। নিজেদের অজ্ঞাতে এ ধরনের প্রতারণার শিকার হলে গোয়েন্দা পুলিশকে অবহিত করার জন্য জানানো হয়েছে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের অভিযানে গত বুধবার রাতে গ্রেফতার করা হয় ছয় জনকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে। গ্রেফতারকৃত আসামি পলাশ চন্দ্র দাস (৩৯), ‘ট্রাভেলস ডায়েরি’ নামে একটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক ওয়াহিদ উদ্দিন (৩৮) ও তার সহকারী শফিকুল ইসলাম সুমন (৩৭)-এর সঙ্গে পরস্পর যোগসাজশে মালদ্বীপ, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের জাল সিলযুক্ত ভিসা পাসপোর্টে ব্যবহার করে।

গ্রেফতারকৃত আরেক আসামি মাহবুবুর রহমান (৩৬) অবৈধভাবে আমেরিকার ভিসা পাওয়ার জন্য হ্যাপি হলিডেজ নামে একটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান (৩৬) ও তার সহকারী আবু জাফর (২৫) পরস্পরের যোগসাজশে বিভিন্ন দেশের জাল ভিসা ও সিল নিজেরা তৈরির পর পাসপোর্টে ব্যবহার করে। আমেরিকান দূতাবাসে ভিসার আবেদন জমা দেওয়ার পর দূতাবাসের কর্মকর্তাদের কাছে ভিসা এবং সিল অসংগতিপূর্ণ মনে হলে তথ্য যাচাই করে প্রকৃত ঘটনা জানা যায়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শরণাপন্ন হলে ৬ প্রতারককে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, ভিসা জালিয়াতি কিংবা ইমিগ্রেশনের সিল জালিয়াতি করে আমেরিকার ভিসা আবেদনকারীসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিককে গ্রেফতার করেছি আমরা। এ ধরনের প্রতারণার সঙ্গে আরও বেশ কয়েকটি ট্রাভেল এজেন্সির সম্পৃক্ততা পেয়েছি। তাদের অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেফতার অভিযান চলমান রয়েছে।

ভিসা জালিয়াতি সম্পর্কে যা বলছে মার্কিন দূতাবাস

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মার্কিন দূতাবাস জানায়, মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে সমন্বয় করে বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে, যারা মার্কিন ভিসা আবেদনকারীর কাছে প্রতারণামূলক এন্ট্রি ও এক্সিট স্ট্যাম্প ব্যবহার করছিল।

মার্কিন ভিসা আবেদনকারীরা ভিসা আবেদনে যে তথ্য দেন এবং সাক্ষাৎকারে তারা যেসব ডকুমেন্ট দিয়ে থাকেন তার জন্য তারা দায়ী। সম্ভাব্য ভিসা আবেদনকারীর জন্য নির্দেশনা হলো মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইট পর্যালোচনা করা। যেকোনও সহায়ক ডকুমেন্টের সঙ্গে তাদের সাক্ষাৎকারের জন্য প্রস্তুত থাকা এবং ভিসা প্রক্রিয়া ও সাক্ষাৎকারের সময় সঠিক এবং সত্য বাস্তবসম্মত উত্তর দেওয়া।

ভিসার জন্য আবেদন করতে ব্রোকার ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। আবেদনকারীদের অনলাইনে তাদের নিজস্ব আবেদন সম্পন্ন করতে সবসময় উৎসাহিত করা হয়। একটি আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের তথ্য ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। যারা আবেদনকারী তাদের সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে, মিথ্যা তথ্য এবং ভুল ডকুমেন্ট উপস্থাপনের ফলে শুধু ভিসা প্রত্যাখ্যান নয়, এর ফলে অযোগ্য হতে পারে ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে।

 

এএনবি২৪ ডট নেট/নিউজ ডেস্ক।

প্রকাশকঃএম এইচ, কে , উপদেষ্টা সম্পাদক,জাহাঙ্গীর আলম জাবির, ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃনির্বাহী সম্পাদকঃ বার্তা সম্পাদকঃ সাইদুর রহমান মিন্টু এএনবি২৪ ডট নেট নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকে । তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি anb24.net is one of the most popular Bangla News publishers. It is the fastest-growing Bangla news media that providesective news within the accurate and obj shortest poassible time.anb24.net intends to cover its reach throughout every district of the country, also global news of every segment such as politics, economics, sports, entertainment, education, information and technology, features, lifestyle, and columns anbnewsbd@gmail.com /mahamudulbd7@gmail.com mahamudul@anb24.net