মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) ফরিদপুরের ভাঙ্গায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন ডা. কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নিতে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলাকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে নতুন রূপে। এক্সপ্রেসওয়ের ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন ও জংশন সংলগ্ন এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে তোরণ। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরে সাঁটানো হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুন।
দলীয় প্রধানের আগমন ঘিরে উল্লাসিত নেতাকর্মীরা। সব পর্যায়ের নেতাকর্মীর মধ্যেই চাঙা ভাব বিরাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত করতে পাড়ায় পাড়ায় চলছে প্রস্তুতি। বর্ণিল রূপে সাজানো হয়েছে ভাঙ্গার বামনকান্দা এলাকায় অবস্থিত ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, দলীয় নেতাকর্মীদের তৎপরতাও বেড়েছে ভাঙ্গায়। সংস্কার করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর চলাচলের সড়কের ছোটখাটো গর্ত। এছাড়া ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে শুরুর স্থান থেকে ডা. কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়াম পর্যন্ত রাস্তাটি প্রশস্ত করা হয়েছে। রাস্তার দুই ধারের অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়েছে। রাস্তার পাশের বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো সরিয়ে রাস্তার বাইরে নেয়া হয়েছে। এছাড়া স্টেডিয়ামের আশপাশের খালি জায়গাগুলো বালু দিয়ে ভরাট করে গাড়ি রাখা এবং লোকজন দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে জেলাবাসীর দাবি ফরিদপুর বিভাগ ও একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের। ফরিদপুর নাগরিক মঞ্চের সভাপতি পান্না বালা বলেন, ভাঙ্গার সঙ্গে ঢাকার রেল যোগাযোগ চালু হওয়ায় আমরা খুব আনন্দিত। তবে ফরিদপুরে একটি ইপিজেড করার পরিকল্পনা সরকারের ছিল। প্রধানমন্ত্রী ফরিদপুরে আসছেন। তিনি এসে যদি এসব কাজ শুরু করতে সরাসরি পদক্ষেপ নেন, তাহলে শিল্পে অনুন্নত এই জেলা অনেকদূর এগিয়ে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ভাঙ্গার বামনকান্দা রেলস্টেশনে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে করে এসে নামবেন। তার আগে মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় সুধী সমাবেশে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ট্রেনযোগেই আবার ভাঙ্গার উদ্দেশে রওনা হবেন। এসে ভাঙ্গা-ঢাকা ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করে দুপুর ২টার দিকে জনসভায় যোগ দেবেন।
বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) ফরিদপুরের সমন্বয়ক শিপ্রা গোস্বামী বলেন, প্রধানমন্ত্রী কাল ফরিদপুরে আসবেন। আমরা এতে খুশি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার জন্ম ফরিদপুর জেলায়। তারা তো আমাদের জেলার লোক, গোপালগঞ্জ আগে ছিল মহকুমা। আমাদের মানুষ আমাদের কাছে আসছেন, আমাদের কিছু দাবি থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। ফরিদপুরে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চাই আমরা।
তিনি বলেন, ফরিদপুরের চেয়ে অনেক ছোট ও নতুন জেলা বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছে। একটি বিশ্ববিদ্যালয় পাওয়ার সব যোগ্যতাই ফরিদপুরের রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে যদি নতুন করে একটি বিভাগ করা হয়, সেক্ষেত্রেও ফরিদপুরকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। আমাদের এসব চাওয়া প্রধানমন্ত্রীর জানা আছে এবং তিনি এসব খুব গুরুত্ব দিয়ে ভেবে দেখবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।
জেলাবাসীর দাবি প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে এই অঞ্চলে একটি ইকোনমিক জোন বা ইপিজেড স্থাপন করার। এতে একদিকে যেমন এই অঞ্চলে শিল্পের বিস্তার ঘটবে, পাশাপাশি ওইসব শিল্পের ওপর ভর করে অনেক শিক্ষিত যুবকের চাকরি ও উদ্যোক্তা হওয়ার পথ সুগম হবে।
ভাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, আগামীকাল ভাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে তার নিরাপত্তার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট সব শাখার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয়ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।