বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচিতে নারায়নগঞ্জের আড়াইহাজারে নাশকতা, সহিংসতা ও ৩ পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
বৃস্পতিবার (২ নভেম্বর) ভোরে রাজধানীর গুলশানের একটি পাঁচ তারকা হোটেল থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক ইমরান খান।
তবে প্রাথমিকভাবে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিস্তারিত নাম-পরিচয় জানায়নি পুলিশের বিশেষায়িত এ বাহিনী।
গতকাল মঙ্গলবার আড়াইহাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাঁচরুখী বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান বিএনপির নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে তিনজন পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করেন তারা। এ ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। আহত তিন পুলিশ সদস্য হলেন- পরিদর্শক হুমায়ুন কবির, সহকারী উপপরিদর্শক মো. মতিন ও কনস্টেবল মো. নুরুল।
বিএনপি, জামায়াতসহ বিরোধীদলগুলোর ডাকা তিন দিনের অবরোধের শেষ দিন আজ। গত দুই দিনের তুলনায় আজ রাস্তায় যান চলাচলের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। এখনও কোথাও কোনো সংঘর্ষ বা মিছিল-স্লোগানের তথ্য পাওয়া যায়নি। সাধারণ দিনের চেয়ে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর টহলও বেশি ছিল সড়কে।
এদিকে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা সারাদেশে টানা তিনদিনের সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচির শেষ দিন আজ। গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশে হামলা, নেতাকর্মীদের হত্যা, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের সহস্রাধিক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার, বাড়ি বাড়ি তল্লাশি-হয়রানি ও নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং চলমান এক দফা দাবিতে টাবিএনপির পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। পরে জামায়াত ইসলামীও তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে। একইসঙ্গে সমমনা দলগুলোরও ডাকা অবরোধের শেষ হচ্ছে আজ।
গত রোববার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের পর দলগুলোর ঘোষিত তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিন মঙ্গলবার রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) পাশাপাশি রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বুধবার (১ নভেম্বর) দ্বিতীয় দিনের অবরোধ কর্মসূচিতে দিনব্যাপী রাজধানীর বিভিন্নস্থানে ঝটিকা মিছিল, সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগানসহ কোথাও কোথাও সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি স্থানে পিকেটিং হয়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। বগুড়ায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন তারা। সিলেটে হরতাল চলাকালে ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়, যুবদল ও ছাত্রদলের।
বিএনপির সিনিয়র নেতারা দাবি করেছেন, চলমান অবরোধ কর্মসূচিতে জনগণের ব্যাপক সাড়া দেখছেন তারা। জনগণের সমর্থনে নজিরবিহীন অবরোধ পালিত হয়েছে। সে কারণে সরকারের পক্ষ থেকে শত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও মহাসড়কগুলোয় দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলেনি। ঢাকার ভেতরেও সাধারণ মানুষ নিজ থেকেই সরকারের প্রতি অনাস্থা দিয়ে একান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না। এই বিষয়টি দাবি আদায়ে বিএনপিকে টানা কর্মসূচিতে যেতে অনুপ্রাণিত করছে।
তারা মনে করেন, অবরোধের শেষ কর্মসূচির পর দলের পক্ষ থেকে আগামী সপ্তাহজুড়ে ফের দেশব্যাপী অবরোধ দেওয়া হবে। এটি চলমান থাকতে পারে পরবর্তী সপ্তাহতেও।