মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোটে জয়ী হয়েছেন চীনপন্থি নেতা মোহাম্মদ মুইজ্জু এই বিজয়ে তাকে অভিনন্দন জানান বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহসহ বিশ্বনেতারা নির্বাচনের জয়ের পর সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, মালদ্বীপের ভবিষ্যৎ গঠনের জন্য এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখন আমাদের ভেদাভেদ ভুলে সামনে এগোনোর সময়। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাজ চাই।
আজকের নির্বাচনে জনগণের প্রকৃত দেশপ্রেম প্রতিফলিত হয়েছে। শনিবার ভোট গণনা শেষে মুইজ্জু পেয়েছেন ৫৪ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে ভারতপন্থি বর্তমান প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সলিহ পেয়েছেন ৪৬ শতাংশ ভোট।
নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনে ৮৫ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ভোট শুরুর আগেই ভোটকেন্দ্রের সামনে ভোটারের লম্বা লাইন দেখা যায়। নির্বাচন কমিশনের এক মুখপাত্র বলেন, দ্বিতীয় দফার এই ভোটে ২ লাখ ৮২ হাজার ভোটারের অংশ নেওয়ার কথা। দেশটিতে জনসংখ্যা ৫ লাখ। এদিকে একটি ভোটকেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয়। এতে কেন্দ্রের ব্যালট বাক্স ভেঙে গেছে বলে ছবি প্রকাশ করেছে দেশটির গণমাধ্যম। ছবিতে দেখা যায়, কক্ষের মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ব্যালট। আরো পড়ুন ,<<<<< প্রেসিডেন্ট সোলিহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু
এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়।গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত প্রথম দফার নির্বাচনে কোনো প্রার্থী একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্থাৎ ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়ায়। মালদ্বীপের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু রাজধানী মালের বর্তমান মেয়র। তার জন্ম ১৯৭৮ সালের ১৫ জুন। তিনি যুক্তরাজ্যের লিডস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। তিন সন্তানের বাবা মুইজ্জু ২০১২ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। পুলিশ ও সামরিক বিদ্রোহের পর মালদ্বীপের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার পতনের পর গঠিত ঐক্য সরকারের আবাসনমন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি।
২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর ভি আরা বিক্রির ঘটনায় অর্থ পাচার ও ঘুষ ের অভিযোগে ১১ বছরের কারাদণ্ড ের পর থেকে বিরোধী দল পিপিএম-পিএনসি জোটের নেতা মাফুশি কারাগারে বন্দী রয়েছেন।
পিপিএমের এক শীর্ষ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুমকে রোববার দুপুর ২টার পর গৃহবন্দী করা হবে বলে জানিয়েছেন।
মালদ্বীপ ের কারেকশনাল সার্ভিস জানিয়েছে, ইয়ামিনকে ‘সাময়িকভাবে’ হোম কোয়ারেন্টাইনে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
ইয়ামিনের সমর্থকরা মালেতে আলিমাস কার্নিভালের কাছে দলের “ধীভেঙ্গে রাজে” কেন্দ্রে জড়ো হতে শুরু করেছেন।
ইয়ামিনের স্ত্রী ফাতিমাত ইব্রাহিমও ঘটনাস্থলে রয়েছেন।
মালদ্বীপের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ মুইজ্জু, যিনি শনিবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহকে পরাজিত করেছিলেন – রাষ্ট্রপতিকে তার নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহার করে বিরোধী দল পিপিএম-পিএনসি জোটের নেতাকে গৃহবন্দী করার আহ্বান জানানোর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শনিবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান, যা নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম সংবাদ সম্মেলনে
সংবাদ সম্মেলনে মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট সোলিহকে তার নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহার করে সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুমকে কারাগার থেকে গৃহবন্দী করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, এই পদক্ষেপ ‘দেশের সর্বোত্তম স্বার্থে’।
নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, মুইজ্জু ৫৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন এবং প্রেসিডেন্ট সোলিহ ৪৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।
কারাবন্দী থাকা সত্ত্বেও ইয়ামিন পিপিএম-পিএনসির হয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেষ্টা করেছিলেন, তবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল – যা বর্তমানে উচ্চ আদালতে আপিলের অধীনে রয়েছে।
পিপিএম-পিএনসি’র অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে মুইজ্জু অভিযোগ করেছেন, প্রেসিডেন্ট সোলিহ প্রশাসন ইয়ামিনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাকে প্রভাবিত করছে।
তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে নির্বাচিত হওয়ার পরে কথিত সরকারী প্রভাব অপসারণ করা হবে এবং ইয়ামিনের সাথে ন্যায্য আচরণ নিশ্চিত করা হবে।