দুনিয়ায় একটি মসজিদ বানালে,জান্নাতে আল্লাহ তাকে একটি ঘর উপহার দেবেন-হাদিস

তিরমিজি শরিফের হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে দুনিয়ায় একটি মসজিদ বানাবে, জান্নাতে আল্লাহ তাকে একটি ঘর উপহার দেবেন।

পবিত্র কোরআনে সূরা তাওবার ১৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের অন্যতম একটি গুণ উল্লেখ করতে গিয়ে বলেছেন, ‘আল্লাহ এবং আখেরাতে বিশ্বাসী মুমিনরা মসজিদ আবাদ করে।’ ‘মসজিদ আবাদ করা’র ব্যখায় মুফাসসিরগণ বলেন, এর একটি অর্থ হচ্ছে বিশ্বাসীরা বেশি বেশি মসজিদ বানাবে।

দ্বিতীয় অর্থ হলো, সেখানে নিয়মিত জামাতের ব্যবস্থা করবে। তিরমিজি শরিফের হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে দুনিয়ায় একটি মসজিদ বানাবে, জান্নাতে আল্লাহ তাকে একটি ঘর উপহার দেবেন।

মসজিদ বানানোর ফজিলত সম্পর্কে বর্ণিত হাদিসের সংখ্যা অনেক। যেকোনো আমলের জন্য ইখলাস-নিষ্ঠা জরুরি। দুঃখজনক হলেও সত্য, বহু মানুষ সুনাম কুড়ানোর আশায়, রাজনৈতিক চিন্তায় মসজিদ বানিয়ে থাকেন। সবচেয়ে যন্ত্রণায় কথা হলো, হারাম উপার্জনে মসজিদ বানানোরা ঘটনাও আমাদের দেশে কম নয়। গোপনে উপার্জিত হারামের টাকায় তো বটেই, প্রকাশ্যে যে ব্যক্তির হারাম উপার্জনের কথা ছড়িয়ে পড়েছে, তার পয়সায়ও আজকাল মসজিদ হচ্ছে।

শরিয়তের বিধান হলো, আল্লাহর জন্য নিবেদিত যেকোনো আমল- চাই তা শারীরিক বা আর্থিক হোক, শতভাগ হালাল এবং ইখলাসের সঙ্গে হতেই হবে। দশমিক শূন্য এক শতাংশও যদি হারাম বা রিয়া মিশে যায় তবে ওই আমলের গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট হয়ে যায়। তাহলে হারাম অর্থে নির্মিত মসজিদ এবং সে মসজিদে নামাজ পড়ার হুকুম কী- আসুন জেনে নিই।

১. হারাম উপার্জনে মসজিদ বানানো কবিরা গোনাহ।

২. মসজিদ কমিটির লোক জেনে শুনে হারাম উপার্জনের দান গ্রহণ করলে শক্ত গোনাহর অধিকারী হবে।

৩. পুরো মসজিদটিই যদি হারাম টাকায় নির্মিত হয়, তাহলে সামর্থ্যবানদের উচিত ওই হারামখোরকে টাকা ফেরত দিয়ে মসজিদকে হালাল আয়ের মসজিদের রূপান্তর করা।

৪. কিছু হারাম আর কিছু হালাল টাকায় নির্মিত মসজিদের ক্ষেত্রে বিধান হলো, যদি হারাম টাকা কতটুকু মিশেছে তা নির্ণয় করা যায়, তাহলে ওই টাকা মসজিদের আয় থেকে বের করে ফেলা। সম্ভব হলে হারামখোরকে তার টাকা ফেরত দেওয়া বা অন্য কোনো জনকল্যাণমূলক কাজে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া ব্যয় করা।

৫. এ ধরনের মসজিদে নামাজ পড়ার কারণে মুসল্লিদের কোনো গোনাহ হবে না।

৬. হারাম উপার্জনে তৈরি মসজিদে নামাজ পড়লে নামাজও অশুদ্ধ হবে না।

৭. মুসল্লিদের দায়িত্ব হচ্ছে, মনে মনে হারাম উপার্জনকে ঘৃণা করতে হবে এবং হারামখোরদের বিরুদ্ধে সামজিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে।

৮. মুসল্লিরা কোনোভাবেই মসজিদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো কিংবা মসজিদ ভেঙে ফেলার চেষ্টাও করবে না।

৯. কমিটির দায়িত্ব হলো, দানের টাকার উৎস কী তা যাচাই করা। অতীতের বুজুর্গরা যাচাই না করে মসজিদ-মাদরাসার জন্য কোনো দান গ্রহণ করতেন না।

১০. সর্বোপরি দ্বীনদার-সাহসী কমিটি গঠন করলে, মসজিদে হারাম টাকা ঢোকার সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়।