দেশের একটি অতি পরিচিত ফল পেঁপে। অত্যন্ত উপকারী এই ফলে রয়েছে জরুরি কিছু ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাণ্ডার। বিশেষ করে পেঁপেতে থাকা ফাইবার পেটের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই সুস্থ থাকতে নিয়মিত পেঁপে খেতেই হবে।আমরা সাধারণত পেঁপে খেয়ে বীজগুলো ফেলে দেই। কিন্তু জানলে অবাক হবেন, পেঁপের পাশাপাশি এর বীজও কিন্তু ততধিক উপকারী। এতেও রয়েছে একাধিক স্বাস্থ্যগুণ সমৃদ্ধ উপাদান। যা ভয়ানক সব রোগের ফাঁদ এড়াতে সাহায্য করে।
তাই আর দেরি না করে পেঁপের বীজের একাধিক চমকে দেওয়া গুণাগুণ সম্পর্কে জেনে নিন। হলফ করে বলতে পারি, তারপর থেকে আপনিও পেঁপে খেয়ে এর বীজ ফেলে দেওয়ার আগে একবার ভাববেন। নিয়মিত সেবনও করবেন। তাতেই ফিরবে আপনার স্বাস্থ্যের হাল।
এড়াতে পারবেন ক্যানসারের ফাঁদ
ক্যানসারের মতো মরণব্যাধির ফাঁদ এড়াতে চাইলে আপনাকে নিয়মিত পেঁপের বীজ খেতেই হবে। কারণ এই বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা কিনা দেহে ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি আটকে দেওয়ার কাজে সিদ্ধহস্ত।
এই বিষয়টি ইতোমধ্যে একটি টেস্টটিউব গবেষণায় প্রমাণিত হয়ে গেছে। সুতরাং কর্কট রোগের ফাঁদ এড়াতে এই বীজের সঙ্গে দ্রুত বন্ধুত্ব করে নিন। তাহলেই উপকার পাবেন হাতেনাতে।
কিডনি থাকবে সুস্থ–সবল
কিডনি হলো আমাদের শরীরের রেচনাঙ্গ। এই অঙ্গটি ঠিকমতো কাজ না করলে দেহের টক্সিন বাইরে বের হতে পারবে না। এই সুযোগেই শরীরে বাসা বাঁধবে একাধিক রোগ। তাই সুস্থ থাকতে এই অঙ্গের হাল ফেরাতেই হবে।
এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে পেঁপের বীজ। কারণ, এই বীজে রয়েছে এমন কিছু অত্যন্ত উপকারী উপাদান, যা কিডনির ক্ষয়ক্ষতির ভার কমাতে পারে। তাই সুস্থ থাকতে নিয়মিত এই বীজ খেতেই পারেন।
ইনফেকশনের সঙ্গে লড়াইতে জিতে যাবেন
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, ফাঙ্গাস ও প্যারাসাইটজনিত কোনো ইনফেকশনের ফাঁদে পড়লে মহৌষধ হয়ে উঠতে পারে পেঁপের বীজ। এমনকি ইস্ট ইনফেকশনের সঙ্গে লড়াই করার কাজেও এর জুড়ি মেলা ভার।
তাই এই ধরনের সমস্যার ফাঁদে পড়লে অবশ্যই পেঁপের বীজ সেবন করুন। এছাড়া যারা এসব রোগের ফাঁদ এড়িয়ে চলতে চাচ্ছেন, তারাও কিন্তু নিয়মিত পেঁপের বীজ গুঁড়া করে পানি দিয়ে গিলে খেয়ে নিতে পারেন। এতেও উপকার মিলবে।
ফিরবে পেটের স্বাস্থ্য
অনেকেই নিয়মিত পেটের সমস্যায় ভোগেন। তার পরও এর থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় খুঁজে পান না। আপনিও কি এই দলেই রয়েছেন নাকি? তাহলে নিয়মিত পেঁপের বীজ সেবন করুন। তাতেই কিন্তু গ্যাস, অ্যাসিডিটির মতো একাধিক রোগের ফাঁদ এড়াতে পারবেন। এমনকি কাছে ঘেঁষবে না কোলাইটিসের মতো সমস্যাও।
তাই পেটের হাল-হকিকত বদলে দিতে চাইলে পেঁপের বীজকে ডায়েটে জায়গা করে দিতেই হবে। এতেই উপকার পাবেন চটজলদি।
বশে থাকবে হাই কোলেস্টেরল
হাই কোলেস্টেরল একটি ঘাতক অসুখ। এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে না রাখলে হার্ট অ্যাটাক থেকে শুরু করে পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে।
তবে ভালো খবর হলো, নিয়মিত পেঁপের বীজ সেবন করলেই কিন্তু কোলেস্টেরলকে বশে রাখা সম্ভব। তাই তো চিকিৎসকেরা প্রায় সব হাইপারলিপিডিমিয়ায় ভুক্তভোগীদের নিয়মিত পেঁপের বীজ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
যেভাবে খাবেন পেঁপের বীজ
পেঁপে কাটার পর বীজগুলো ছাড়িয়ে পরিষ্কার করে রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর একটা জারে ভরে রাখুন। প্রতিদিন সকালে কয়েকটা বীজ গুড়া করে পানি দিয়ে গিলে খেয়ে ফেলুন। কিংবা বীজগুলো আগে থেকেই গুড়া করে জারে রেখে দিতে পারেন।