কুমিল্লার মুরাদনগরে মাত্র ৭০ টাকার জন্য সাইদুল ইসলাম (১৪) নামে এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হাওলাত নেওয়া টাকা পরিশোধ করতে না পারায় রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে তাকে হত্যা করে তারই প্রতিবেশী লিমন (১৯)।
নিহত সাইদুল উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামের সাদেক মিয়ার ছেলে। ঘাতক লিমন একই এলাকার আব্দুল করিম মিয়ার ছেলে। সোমবার নিহতের অভিভাবক হিসেবে (নানা) আ. মালেক বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ দিন পূর্বে নিহত সাইদুল ইসলাম পাশের বাড়ির লিমনের কাছ থেকে ৭০ টাকা হাওলাত নেয়। সাইদুল ইসলাম খুবই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। যথাসময়ে হাওলাত টাকা পরিশোধ করতে না পারায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ির সামনে সড়ক থেকে সাইদুলকে ঘাতক লিমন ধরে বাড়ির ভিতর নিয়ে যায়।
এ সময় ঘাতক ও তার আত্মীয়স্বজনরা সাইদুল ইসলামকে এলোপাতাড়ি মাথায় পিটিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখন করে। পরে বাড়ি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় সাইদুল ইসলামকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে চলে যায়,সেখান থেকে আত্মীয়-স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান; অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
তিন দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর রোববার সাইদুল ইসলাম মারা যায়। নিহতের নানা আ. মালেক অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে জানান, আমার মেয়ের ঘরের নাতি সাইদুল। সে জন্মের ৩ দিনের মাথায় তার মা মারা যায়। তাকে আমরাই এ পর্যন্ত লালন পালন করে বড় করেছি। তার বাবা দিনমজুর। দ্বিতীয় বিয়ে করে সংসার নিয়ে খুব কষ্টে চলে। সাইদুল ইসলাম মুরাদনগর কনিকা টেইলার্সে কাজ করত।
৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে টেইলার্সের দোকান থেকে ঘোড়াশাল নিজ বাড়িতে যায়। বাড়ি থেকে আসার সময় রাস্তার ওপর থেকে তাকে ৭০ টাকা পাওনা আদায়ের জন্য টেনে হিঁচড়ে তুলে নেয় লিমন। এ সময় পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল লিমনের দুই জেঠা। তাদের সামনেই আমার নাতিকে পিটিয়ে মাথা থেঁতলে রাস্তায় ফেলে রাখেন। খবর পেয়ে আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাইদুল মারা যায়। আমি এই খুনিদের উপর্যুক্ত শাস্তি দাবি করছি। মুরাদনগর থানার ওসি মো. মাহবুবুল হক বলেন, নিহতের নানা বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।