দেশে এখন সম্প্রচারে আছে ৩০ টিরও অধিক চ্যানেল। এর মধ্যে কটি যে সত্যিকার ‘টেলিভিশন’ হতে পেরেছে, সে এক বড় প্রশ্ন। রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে চ্যানেল সংখ্যা বাড়লেও সবই যেন একইরকম। মাঝে মাঝে লোগো দেখে বুঝতে হয় কোনটা কোন চ্যানেল।
এবারের আন্দোলনে গণমানুষের কাছে প্রিয় হয়ে উঠে ‘যমুনা টেলিভিশন’। কারণ এর সংবাদ প্রকাশে ছিল ভিন্নতা। কথা হয়েছিল যমুনা টিভির সিইও স্নেহভাজন ফাহিম আহমেদের সঙ্গে। অভিনন্দন জানালাম বলল, ‘একটু ঝুঁকি নিয়েই সত্য প্রকাশ করতে হয়েছে।’ এটাই বাস্তবতা। কিন্তু ঝুঁকি কেন থাকবে? মিডিয়ার স্বাধীনতা হরণই এর জন্য দায়ী। গণমাধ্যম থেকেও অনেক তথ্য সংগ্রহ করা যায়, অনিয়ম চিহ্নিত করা যায়। তাই গণমাধ্যমকেও হতে হবে স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ।
নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে গণমাধ্যমের এই দলীয় সংস্কৃতি থেকে সবাই মুক্তি চায়। আমরা পেয়েছি এক অসাধারণ মেধাসম্পন্ন নতুন প্রজন্ম। তাদের যে মেধা, দৃঢ়তা, দক্ষতা দেখেছি-তারাই পারবে আমাদের একটি নতুন বাংলাদেশ উপহার দিতে।
নৈতিকতা মানুষকে অনুপ্রাণিত করে, উন্নত নীতি আদর্শের স্পর্শে, পরামর্শে, উৎকর্ষের পথে এগিয়ে যায় মানুষ। তার ওপর স্থাপন করে বিশ্বাস। এখন চারদিকে দেখি বিশ্বাসের অবক্ষয়। সব অবক্ষয় থেকে মুক্তি চায় মানুষ।
আমাদের সংস্কৃতি আমাদের অনন্ত অক্ষয় সম্পদ এবং সামাজিকতা আমাদের জাতিসত্তার পরিচয়। আত্মপরিচয়ের এই অহংকার আমাদের বাঁচিয়ে রাখতেই হবে। আর সেটা সম্ভব একটি বৈষম্যহীন দুর্নীতিমুক্ত সুশাসনের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে। যাদের প্রাণের বিনিময়ে এই বিজয় অর্জিত হয়েছে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি।
এই বিজয়ে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে আমরা পেয়েছি একটি নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যার হাল ধরেছেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর সরকার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছে তরুণদেরই একজন প্রতিনিধি মো. নাহিদ ইসলামকে।
তরুণ এই উপদেষ্টার কাছে আমরা আশা করছি দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় প্রচার যন্ত্রটি তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে। সকল গণমাধ্যমও সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলার সাহস পাবে। আর এই নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণদের পাশাপাশি মিডিয়ার দায়িত্ব ও গুরুত্ব অপরিসীম।
মাননীয় তথ্য উপদেষ্টার কাছে সবিনয় নিবেদন এবারের এই স্বাধীন বাংলাদেশের একটি অন্যতম অর্জন হোক ‘অসত্য’ তথ্য বর্জিত একটি স্বাধীন গণমাধ্যম। যেখানে গণমাধ্যম কর্মীরা স্বাধীনতা ও নৈতিকতা বজায় রেখে সর্বোচ্চ সেবা প্রদান করতে পারবে। যেখানে দলমত-নির্বিশেষে সবাই মন খুলে কথা বলতে পারবে।
হানিফ সংকেত গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।