আল-আমিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির সুযোগ নেই, শুনানি ১৬ অক্টোবর

একসঙ্গে বসবাসের অধিকার, মাসিক ভরণ-পোষণ ও সন্তানদের খরচ দাবি করে স্ত্রী ইসরাত জাহানের মামলায় ক্রিকেটার আল-আমিন হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে। তবে এ মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন বিচারক।

বুধবার (১২ অক্টোবর) ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে আল-আমিনের জবাব দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন আল-আমিন আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় তার আইনজীবী সময়ের আবেদন দাখিল করেন। অপরদিকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন আল-আমিনের স্ত্রী ইসরাত জাহানের আইনজীবী শামছুজ্জমান।

এদিকে আদালত সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে আদালত আল-আমিনের আইনজীবীকে এক ঘণ্টা পর শুনানি করতে বলেন। এরপর বিচারক মামলাটি শুনানির জন্য ডাকলে আল-আমিনের স্ত্রী উপস্থিত হননি। এছাড়া দুই পক্ষের আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত হননি। পরে আদালত জবাবের বিষয় শুনানির জন্য রোববার (১৬ অক্টোবর) দিন ধার্য করেন।

এদিন এজলাসে বিচারক বলেন, এটি পারিবারিক সুরক্ষার মামলা। এ মামলায় আইনে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির সুযোগ নেই। আজ বিবাদীপক্ষের জবাব শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। এ মামলায় আল-আমিন জবাব দিয়েছেন। জবাবের একটি কপি আল-আমিনের স্ত্রী পাওয়ার হকদার। তাই এদিন মামলার জবাব দাখিলের ওপর শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বাদী উপস্থিত হলেও এক ঘণ্টা পর আসতে বলা হয়। তিনি উপস্থিত না হওয়ায় আগামী ১৬ অক্টোবর দিন ধার্য করা হলো।

 

ইসরাত জাহানের আইনজীবী শামছুজ্জমান বলেন, আল-আমিন আদালতে হাজির না হওয়ায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছি।

এর আগে গত ৬ অক্টোবর ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে আল-আমিন স্ত্রী ইসরাত জাহানকে তালাক দিয়েছেন বলে লিখিত জবাব দাখিল করেন। স্ত্রীর বিরুদ্ধে আল-আমিন বৈবাহিক সম্পর্কের তিক্ততা বৃদ্ধি ও অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ তুলেছেন।

 

ওইদিন ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে আল-আমিন উপস্থিত হন। এরপর মামলার বিষয়ে ৭ পাতার একটি লিখিত জবাব দাখিল করেন। এ বিষয়ে ১২ অক্টোবর শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।

আল-আমিনের স্ত্রী ইসরাত জাহান বলেন, আমি তালাকের বিষয়ে কিছুই পাইনি। আমি ন্যায়বিচার পাচ্ছি না। আমি ন্যায়বিচার চাই।

বাদীর আইনজীবী শামসুজ্জামান বলেন, আসামি আল-আমিন আদালতে উপস্থিত হয়ে হাজিরা দেন। এরপর আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে লিখিত জবাব দাখিল করেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়, তিনি গত ২৫ আগস্ট তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। তবে তার স্ত্রী তালাক সংক্রান্ত কোনো কাগজ পাননি।

লিখিত জবাবে ক্রিকেটার আল-আমিন উল্লেখ করেন, গত ২৫ আগস্ট আমি স্ত্রীকে তালাক দিয়েছি। আমি তাকে দেনমোহর, ভরণ-পোষণ দিতে প্রস্তুত। আমাদের দুই সন্তান আমার বাসায় থাকবে ও তাদের পড়ালেখার খরচ আমি বহন করছি। তাই তাদের খরচ দিতে আমি বাধ্য না।

এর আগে ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালতে ক্রিকেটার আল-আমিন আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় ৬ অক্টোবর পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন।

তারও আগে ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালতে মামলাটি করেন আল-আমিনের স্ত্রী ইসরাত জাহান। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আল-আমিনকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।

মামলায় বলা হয়, ২০১২ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক ইসরাত জাহান ও আল-আমিন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দুটি পুত্রসন্তান রয়েছে। বড় ছেলে মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে ইংরেজি ভার্সনে কেজিতে পড়াশোনা করছে। বেশ কিছুদিন ধরে আল-আমিন তার স্ত্রী-সন্তানদের ভরণ-পোষণ দেন না এবং খোঁজ না রেখে এড়িয়ে চলেন। যোগাযোগও করেন না।

গত ২৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে আল-আমিন বাসায় এসে স্ত্রীর কাছে যৌতুকের জন্য ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। ইসরাত জাহান টাকা দিতে অস্বীকার করলে আল-আমিন তাকে এলোপাতাড়ি কিলঘুসিসহ লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করেন। সংসার করবেন না বলে জানান। ইসরাত জাহান ৯৯৯-এ টেলিফোন করে সাহায্য চাইলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। পরে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ইসরাত জাহান। এ ঘটনায় ১ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় মামলাও হয়।

সর্বশেষ গত ৩ সেপ্টেম্বর আল-আমিন তার মায়ের মাধ্যমে জানান, ইসরাতের সঙ্গে সংসার করবেন না এবং সন্তানদের ভরণ-পোষণ দেবেন না। প্রয়োজনে স্ত্রীকে বাসা থেকে বের করে দেবেন, তালাক দেবেন। পরকীয়ায় আসক্তের কারণে এ কাজ করেছেন এবং একজন নারীর সঙ্গে ওঠানো ছবি ইসরাতের কাছে পাঠান।

আল-আমিন স্ত্রী-সন্তানদের বাসা থেকে বের করে অন্যত্র বিয়ে করবেন বলে জানান। দুই বছর ধরে আসামি বাদীর খোঁজখবর নেন না এবং বাসায় নিয়মিত থাকেন না। যার কারণে ইসরাত তার দুই সন্তানসহ বসতবাড়িতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার অধিকারসহ মাসিক ভরণ-পোষণ দাবি করে মামলাটি করেন। জীবনধারণের জন্য ৪০ হাজার, দুই সন্তানের ভরণ-পোষণ ও ইংলিশ মিডিয়ামে লেখাপড়া বাবদ মাসে ৬০ হাজার টাকা আল-আমিনের কাছে পাওয়ার হকদার বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

আইনে যা রয়েছে

১৯৮৫ সালের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ অনুযায়ী ভরণ-পোষণের জন্য স্ত্রীর মামলা করার অধিকার আছে। এটি একটি দেওয়ানি প্রতিকার। এ অধ্যাদেশে ভরণ-পোষণ, দেনমোহর, বিবাহ-বিচ্ছেদ, অভিভাবকত্ব বিষয়ে পারিবারিক আদালতে মামলা করার কথা বলা হয়েছে।

দ্বিতীয়ত, ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৯ ধারায় বলা আছে, স্বামী ভরণ-পোষণ দিতে ব্যর্থ হলে স্ত্রী স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে এ বিষয়ে আবেদন করতে পারবেন। চেয়ারম্যান সালিসি পরিষদ গঠন করে ভরণ-পোষণের পরিমাণ ঠিক করবেন এবং সার্টিফিকেট ইস্যু করবেন। স্বামী অথবা স্ত্রী নির্ধারিত পদ্ধতিতে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে ইস্যুকৃত সার্টিফিকেটটি পুনর্বিবেচনার উদ্দেশ্যে সহকারী জজের কাছে আবেদন করতে পারবেন এবং এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সহকারী জজের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে। স্বামী এরপরও নির্ধারিত ভরণ-পোষণ না দিলে স্ত্রী বকেয়া ভূমি রাজস্বের আকারে তা আদায় করতে পারবেন।

প্রকাশকঃএম এইচ, কে , উপদেষ্টা সম্পাদক,জাহাঙ্গীর আলম জাবির, ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃনির্বাহী সম্পাদকঃ বার্তা সম্পাদকঃ সাইদুর রহমান মিন্টু এএনবি২৪ ডট নেট নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকে । তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি anb24.net is one of the most popular Bangla News publishers. It is the fastest-growing Bangla news media that providesective news within the accurate and obj shortest poassible time.anb24.net intends to cover its reach throughout every district of the country, also global news of every segment such as politics, economics, sports, entertainment, education, information and technology, features, lifestyle, and columns anbnewsbd@gmail.com /mahamudulbd7@gmail.com mahamudul@anb24.net