বৈশ্বিক দারিদ্র্য বিমোচন সংস্থা অ্যাকশন এইড প্যালেস্টাইনের বরাত দিয়ে ওয়াফা সংবাদপত্র জানিয়েছে, জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়া হাসপাতালগুলো আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে পারে এবং সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দিতে পারে।
জাতিসংঘ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের হাসপাতালগুলোতে থাকা জ্বালানির মজুদ আর মাত্র ২৪ ঘণ্টা বা তারও আগে ফুরিয়ে যেতে পারে। এতে করে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে সেখানে থাকা হাজার হাজার রোগীর জীবন।
জাতিসংঘের মানবিক কার্যালয় তার ওয়েবসাইটে বলেছে, ‘জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার ফলে ব্যাকআপ জেনারেটর বন্ধ হয়ে গেলে গাজার হাজার হাজার রোগীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।’ মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত সপ্তাহে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামের একটি অভিযান চালায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
হামাসের এই অভিযানে ২৮৬ সেনাসদস্যসহ ১৫০০ ইসরায়েলি নিহত হন। আহত হয়েছেন আরও হাজার হাজার ইসরায়েলি। এছাড়া আরও বহু মানুষকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস।
পরে হামাসের এ হামলার প্রতিশোধ নিতে টানা ১০ দিন ধরে গাজায় নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে যাচেছ ইসরায়েলি বাহিনী। এতে নিহত হয়েছে ২৭০০ ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছে আরও ১০ হাজার। এছাড়া অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সীমান্ত প্রাচীরের কাছে সমাবেশ ঘটাান হয়েছে লাখ লাখ ইসরায়েলি সেনার এবং মোতায়েন করা হয়েছে শত শত ট্যাংক ও অন্যান্য ভারী অস্ত্রশস্ত্র।
হামাসের হামলার পর থেকেই গাজায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি, খাদ্য, পানি ও পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে ভূখণ্ডটি অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। জ্বালানি ও পানিসহ মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বেশ কয়েকটি ত্রাণ সংস্থা গাজায় প্রবেশের আহ্বান জানানোর পর জাতিসংঘের এই সতর্কবার্তা সামনে এলো।
এদিকে সমগ্র গাজা উপত্যকায় পানি সরবরাহ পুনরায় চালু করার আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি (আইসিআরসি)। জাতিসংঘে আইসিআরসি-এর স্থায়ী পর্যবেক্ষক ল্যাটিটিয়া কোর্তোয়া বলেছেন, ‘বেসামরিক নাগরিকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তা নিশ্চিত করা যুদ্ধরত পক্ষগুলোর জন্য আবশ্যক। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর সরবরাহ যত দ্রুত সম্ভব পুনরায় চালু করতে সহায়তা করার জন্য আমরা আহ্বান জানাই।’
সূত্র: বিবিসি