Home রাজনীতি ১০ ডিসেম্বর বিএনপির জাতির উদ্দেশে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা ।

১০ ডিসেম্বর বিএনপির জাতির উদ্দেশে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা ।

১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশ হবে। এ নিয়ে মনে কেউ দ্বিধা রাখবেন না। ১০ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হবে। সেই কর্মসূচি নিয়ে জনগণ মাঠে নেমে পড়বেন।’তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। এখন সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময়।… মানুষ যেভাবে জেগে উঠেছে তাতে আমাদের জয় হবেই। বিজয়ের পর আন্দোলনকারী দলগুলোকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন হবে।’

 

সরকার সচেতনতার সঙ্গে বিদেশে টাকা পাচার করেছে অভিযোগ করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘ব্যাংক লুটপাট করে ছারখার করে দিয়েছে। দেউলিয়ার পথে দেশ। যে জাতি স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিল মুক্তির জন্য, আজ সেই জাতির কী করুণ পরিণতি!’
সমাবেশস্থল নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশ হবেই বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ বিষয়ে কোনো দ্বিধা না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

বিএনপি নেতা বলেন, ‘দেশের মানুষ জেগে উঠেছে, এখন সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময়। সরকার নার্ভাস হয়ে পড়েছে। এ কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে যাতে আমরা সমাবেশ করতে না পারি।’

 

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল লেক শোরে এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। ‘ভায়োলেন্স অ্যান্ড পলিটিক্স অব ব্লেমিং’ বিষয়ে এই গোলটেবিলের আয়োজন করে তার দল।বৈঠকে ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনের প্রতিনিধি টম্বাজ, নরওয়ে দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন সিলজে ফাইন ওয়াননিবো, অস্ট্রেলিয়া সেকেন্ড সেক্রেটারি ডানকান কুলোচ এবং ইরাকের প্রতিনিধি অংশ নেন।

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে গত ৮ অক্টোবর থেকে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে বিএনপির ধারাবাহিক যে সমাবেশ হচ্ছে, তা শেষ হচ্ছে ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশের মধ্য দিয়ে।তবে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর, কুমিল্লা ও রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশের স্থল নিয়ে কোনো সমস্যা তৈরি না হলেও ঢাকার সমাবেশের স্থল এখন পর্যন্ত অনিশ্চিত।

 

বিএনপি নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চায়। ২০ নভেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক আবেদনপত্র জমা দেয়া হয় ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে। তবে পুলিশ তাদের অনুমতি দিয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, যেখানে যেতে রাজি নয় দলটি।

এর মধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে পুলিশের কাছে আরামবাগ বরাদ্দ চেয়ে অনুরোধ করা হয়েছে। তবে সেখানেও সমাবেশটি সড়কেই হবে জানিয়ে বাহিনীটির এক কর্মকর্তা তা নাকচ করেছেন। পাশাপাশি তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, আরামবাগের কাছে দেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলের অবস্থান। সেখানে কেন বিএনপি সমাবেশ করবে।

এই পরিস্থিতিতে বিএনপির সমাবেশটি আসলে হবে কি না, তা নিয়েই দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। পাশাপাশি জনমনে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ। এমনকি যুক্তরাজ্য সরকারও সেদিন তার নাগরিকদের ঢাকায় চলাচলের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার তাগিদ দিয়ে ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে।

বিএনপি এই সমাবেশে যে লিফলেট বিতরণ করছে, তাতে বেলা দেড়টায় সমাবেশে আসার আহ্বান জানানো হলেও কোথাও আসতে হবে সেটি বলছে না। আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অবশ্য আশা করছেন বিএনপি শেষ পর্যন্ত সমাবেশস্থল নিয়ে সমঝোতায় আসবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার চাপার ওপর ১৩ বছর ক্ষমতায় টিকে আছে। আমরা যে দাবি নিয়ে সমাবেশ করছি সেটা জনগণের দাবি। এ কারণে সমাবেশে বিএনপির নেতা-কর্মীর চেয়ে সাধারণ জনগণের উপস্থিতি বেশি।’

ভোট চোরদের জনগণ পছন্দ করে না বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য রেখেছেন, তার প্রতিক্রিয়াও জানান বিএনপির এই নেতা। বলেন, ‘ভোট চোর হিসেবে আওয়ামী লীগকে বোঝায় এটি সাধারণ জনগণও জানে। আর প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ভোট চোরকে ভোট দিয়েন না। অর্থাৎ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েন না। এখন আমাদের চূড়ান্তভাবে নাড়া দিতে হবে। এ জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।’

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘নয়টি বিভাগে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছে বিএনপি। কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা হয়েছে সেটা দেখাতে পারবেন না। সরকার নার্ভাস হয়ে পড়েছে। সে কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে যাতে আমরা সমাবেশ করতে না পারি।’

আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বেগম সেলিমা রহমান অংশ নেন।

ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে ছিলেন মীর মোহাম্মদ নাছিরউদ্দিন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, হাফিজ উদ্দিন আহমদ, নিতাই রায় চৌধুরী, জয়নুল আবেদীন, শাহজাহান ওমর, আব্দুল আউয়াল মিন্টু।

চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাদের মধ্যে ছিলেন বিজন কান্তি সরকার, জয়নুল আবদিন ফারুক, তাজমীর এস ইসলাম।

যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও মজিবুর রহমান সরোয়ার, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপনও এতে অংশ নেন।

বিএনপির শরিক দলগুলোর মধ্যে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, ন্যাপ (ভাসানী) চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমও এতে অংশ নেন।

বিএনপি যাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করতে চাইছে, সেই দলগুলোর নেতাদের মধ্যে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও সুব্রত চৌধুরী, জাগপা চেয়ারম্যান খন্দকার লুৎফর রহমানও এতে অংশ নেন। ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহও।

সর্বশেষ খবর

এনবি ২৪ একটি বহুল পঠিত অনলাইন বাংলা সংবাদপত্র।

© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত – এনবি ২৪

কোডিং এবং ডেভেলপমেন্ট – গ্রোউজ আইটি