অনলাইন ডেস্ক
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ব্রিকসে যোগদান এবং রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান নিশ্চিতে চীন সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের সাইড লাইনে বুধবার (২৩ আগস্ট) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় হোটেল হিলটন স্যান্ডটনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিনি এ আশ্বাস দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন শির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, আপনি ব্রিকসে যোগ দিতে পারলে আমি আপনাকে (শেখ হাসিনা) সবসময় সমর্থন করব।
চীনা প্রেসিডেন্ট আরো বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে চীন।
[bs-white-space]
মোমেন জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার সরকার রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে প্রত্যাবাসন করতে চায়। কারণ, তারা এই অঞ্চলের শান্তির জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। কারণ তাদের মধ্যে অনেকেই অবৈধ মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায় জড়িয়ে গেছে।
চীনের প্রেসিডেন্ট রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশকে সবসময় সমর্থন দিয়ে যাবে এবং বাংলাদেশের জ্বালানি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করতে তার দেশের আগ্রহের কথা জানান। শি বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করতে সহযোগিতার ও আশ্বাস দেন।
তিনি আরো বলেন, একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’ গড়ার স্বপ্নকে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়িত করতে চীন আপনাকে সাহায্য করবে। প্রধানমন্ত্রী চীনা অর্থায়নে পরিচালিত কিছু প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে শি জিনপিংয়ের সহায়তা চেয়েছেন যা এখন তহবিল সংকটের জন্য আটকে রয়েছে।
আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় দুই হাজার কোটি মার্কিন ডলারের চীনা পণ্য আমদানি করেছে। যেখানে চীন মাত্র ৭০ কোটি মার্কিন ডলারের বাংলাদেশি পণ্য আমদানি করেছে।
চীনের প্রেসিডেন্ট আশ্বস্ত করেছেন চীন-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ঘাটতি হ্রাস করার উদ্যোগ নেবেন। তিনি জানান, চীনের বাজারে ৯৮ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে কিছু চীনা বিনিয়োগ এলে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য ব্যবধান কমবে। তিনি দুই দেশের মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) স্বাক্ষরের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
উত্তরে, চীনা প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আমরা দেশগুলির মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেব।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আগামী অক্টোবরে পদ্মা রেল সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করতে চীনের প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। জবাবে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি অবশ্যই আপনার দেশে আসব। তবে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সফরের সময় নির্ধারণ করা হবে।
মোমেন জানান, শি জিন পিং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকেও চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
জবাবে শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি চীন সফর করবেন, তবে সময় লাগতে পারে কারণ, জাতীয় নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। তিনি নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত থাকবেন।
এদিকে শেখ হাসিনা চীনের প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের চীনে পড়াশোনার সুযোগ বাড়ানোর আহ্বান জানান এবং শি জিন পিং বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বাস দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোহানেসবার্গে ২২-২৪ আগস্টের ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ২২ আগস্ট এখানে পৌঁছান।
সূত্র : বাসস