যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে এক বছরে ৮শ’ রোহিঙ্গা নেবে

আগামী এক বছরে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির থেকে তিনশ’ থেকে আটশ’ রোহিঙ্গাকে নিজ দেশে আশ্রয় দেবে যুক্তরাষ্ট্র। পরীক্ষামূলক ও পাইলট প্রকল্প হিসেবে এসব রোহিঙ্গাকে যুক্তরাষ্ট্রে নেয়া হবে।

 

বাংলাদেশ চায় ২০১৭ সালের আগে আসা রোহিঙ্গাদের থেকে এই তালিকা করা হোক। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব ২০১৭ সালের আগস্ট ঢলের সময় আশ্রয় নেয়া অধিক ঝুঁকিতে থাকাদের মধ্য থেকে তালিকা করার।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের সফররত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলিয়েটা ভ্যালস বলেন, ‘দীর্ঘায়িত হওয়া রোহিঙ্গা সংকটের গুরুত্বপূর্ণ সমাধান হচ্ছে তাদেরকে নিরাপদে, স্বেচ্ছা ও সম্মানজনকভাবে নিজ দেশে ফেরানো এবং তা হতে হবে টেকসই। যখন সেই সমাধান হচ্ছে না, তখন অন্য সমাধান প্রয়োজন। বিশেষ করে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের জন্য বাড়তি সমাধান দরকার।’, প্রথম দফায় ৬২ জনের তালিকা নিয়ে কাজ করছে দুই দেশ। ৮ ডিসেম্বর ৫/৬ জনের প্রথম দলের যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ধরার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের একটি অংশকে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। বাংলাদেশ এতে রাজি হলেও এটাকে প্রতিশ্রুতিশীল সমাধান মনে করে না। রোহিঙ্গা সংকটের মূল সমাধান তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন।

 

এদিকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন আটকে থাকার প্রেক্ষাপটে এই উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছেন ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েস।

চার দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির পরিদর্শনের পর মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

নয়েস বলেন, ‘দীর্ঘায়িত হওয়া রোহিঙ্গা সংকটের গুরুত্বপূর্ণ সমাধান হচ্ছে তাদেরকে নিরাপদে, স্বেচ্ছা ও সম্মানজনকভাবে নিজ দেশে ফেরানো এবং তা হতে হবে টেকসই। এটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও যুক্তরাষ্ট্র সবাই চায়।

‘যখন সেই সমাধান হচ্ছে না, তখন অন্য সমাধান প্রয়োজন। বিশেষ করে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের জন্য বাড়তি সমাধান দরকার। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের চিহ্নিত করার জন্য ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে কাজ করতে পেরে এবং তাদেরকে তৃতীয় দেশে স্থানান্তর চেষ্টা করতে পেরে আমরা আনন্দিত।’

যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থীদের পুনর্বাসন বাড়ানো বাইডেন প্রশাসনের অগ্রাধিকার। অন্য যেসব সরকার ও অংশীদার রাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করছি, এটা তাদেরও অগ্রাধিকার।

‘দীর্ঘায়িত রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি উদ্বুদ্ধ করতে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করে যাব। কাজ করব, যাতে নিরাপদে নিজ দেশে ফেরার আগে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের জন্য অন্য সমাধান খুঁজে পাওয়া যায়।’

এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, ‘প্রত্যাবাসনই হচ্ছে সমাধান। (রোহিঙ্গাদের) একটা অংশ যাবে। এগুলো ওদের একটা দায়বদ্ধতা মেটানোর জন্য। রোহিঙ্গা কেবল আমাদের মাথাব্যথা না সবার মাথাব্যথা, বিশ্ব নেতাদের মাথাব্যথা। তারা দেখাবে যে আমরা কিছু রোহিঙ্গাকে সাহায্য করেছি।’

যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের একটি অংশ সে দেশে আশ্রয় দিতে চাইলেও সেই সংখ্যাটি কত তা এখনও স্পষ্ট হয়নি।

মোমেন বলেন, “অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে, আমেরিকা এবং অনেক বন্ধুপ্রতীম দেশ ওদেরকে মানবিক সাহায্য করেছে। আমাদের দেয় না, ওদের দেয়। এটা ঠিক আছে। এখন কিছু রোহিঙ্গাকে নিয়ে তার দেশের লোকদের বলতে পারবে, আমরা তো নিয়েছি কয়েকজনকে। বলবে না কতজন।’

যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ অনেক আগে থেকে রোহিঙ্গাদের একটি অংশকে নেয়ার প্রস্তাব দিলেও কম সংখ্যা ও রোহিঙ্গা ঢলের শঙ্কা বিবেচনায় নিয়ে তাতে রাজি হয়নি বাংলাদেশ সরকার।

তবে প্রত্যাবাসন আটকে থাকার মধ্যে বড় সংখ্যায় রোহিঙ্গাদের নেয়ার প্রস্তাব বেশ কিছুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশকে দিয়ে আসছে সরকার।

আগে রাজি না হলেও এখন অবস্থান পরির্বতনের বিষয়ে এক প্রশ্নে মোমেন বলেন, ‘আমরা রাজি হয়েছি, প্রথম যেদিন আমি মন্ত্রী হয়েছি সেদিন থেকেই। আগে ধারণা ছিল, এটা হলে রোহিঙ্গা আরও আসবে।’

অল্প সংখ্যায় পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে ২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গা ঢলের আগে থেকে ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাদের নেয়ার শর্ত দিয়েছে বাংলাদেশ।

মোমেন বলেন, ‘আমরা রাজি হয়েছি। তবে একটা শর্ত আছে আমাদের। মিয়ানমার বলেছে, ২০১৬ সালের পর যারা এসেছে তাদেরকে ভেরিফাই হওয়ার পর নিয়ে যাবে। কিন্তু তার আগে যারা এসেছেন, প্রায় ২৯ হাজার ইউএনএইচসিআরের ক্যাম্পে ছিল। আমরা বলেছি, আগে যেগুলো ছিল ওদেরকে নেয়ার জন্য।’

মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়ে মুসলমান জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার ইতিহাস বেশ আগের। ২০১৭ সালে সাত লাখের মতো রোহিঙ্গা একবারেই আসে। তার আগে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ৪ লাখের বেশি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগে থেকে কক্সবাজারে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি ২০১৭ সালের পর আসা শরণার্থীদের মধ্যে যারা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ তাদেরকেও পাঠাতে রাজি আছে বাংলাদেশ।

তারা জানান, পুনর্বাসনের জন্য প্রথম দফায় ৬০ জনের মতো রোহিঙ্গার একটি তালিকা নিয়ে কাজ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অল্প কিছুদিনের মধ্যে তারা ক্রমান্বয়ে যাবেন। প্রাথমিক ধাপ সম্পন্ন হলে যাচাই-বাছাইয়ের পর আরও রোহিঙ্গাকে নেবে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যাবাসন হতে যাওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যার বিষয়ে এক প্রশ্নে সম্প্রতি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্র একটা বড় সংখ্যায় রোহিঙ্গাদের নেবে।

প্রকাশকঃএম এইচ, কে , উপদেষ্টা সম্পাদক,জাহাঙ্গীর আলম জাবির, ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃনির্বাহী সম্পাদকঃ বার্তা সম্পাদকঃ সাইদুর রহমান মিন্টু এএনবি২৪ ডট নেট নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকে । তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি anb24.net is one of the most popular Bangla News publishers. It is the fastest-growing Bangla news media that providesective news within the accurate and obj shortest poassible time.anb24.net intends to cover its reach throughout every district of the country, also global news of every segment such as politics, economics, sports, entertainment, education, information and technology, features, lifestyle, and columns anbnewsbd@gmail.com /mahamudulbd7@gmail.com mahamudul@anb24.net