প্রবাসী মাহবুবকে বাঁচাতে ছোট্ট মেয়ের আকুতি-চিকিৎসাধীন

অনলাইন

মালয়েশিয়ায় দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত মাহবুব আলমকে বাঁচাতে বিত্তবানদের কাছে আকুতি জানিয়েছে তার ছোট্ট মেয়ে মাহিমা আক্তার অধরা (৭)।

প্রায় আড়াই মাস ধরে মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে- বাংলাদেশি কর্মী মাহবুব আলম (৪৮)। বর্তমানে তার অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। এর আগে চিকিৎসকরা বলছিলেন, তার সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু দুদিন ধরে মাহবুবের শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে। কথা বলতে পারেন না।

বিদেশে ব্যয়বহুল চিকিৎসা এগিয়ে নেওয়া তার পরিবারের সাধ্যের বাইরে। সব মিলিয়ে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করাই এখন বেশি প্রয়োজন। কিন্তু মালয়েশিয়ার হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার সামর্থ্য পরিবারের নেই।

 

 

 

তাই একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটিকে বাঁচাতে, দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার-বিত্তবানদের কাছে আকুতি জানিয়েছে মাহবুবের ছোট্ট মেয়েটি। কান্নাজড়িত কন্ঠে অধরা এ প্রতিবেদককে বলে- আপনারা আমার বাবাকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিন। আমার বাবাকে দেখতে খুবই ইচ্ছা করছে।

গত ২২ জুন মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর রাজ্যের শাহ আলম শহরের পানির পাইপ সরাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন প্রবাসী মাহবুব। সেই থেকে স্থানীয় শাহ আলম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। দুর্ঘটনায় প্রচণ্ড আঘাতে তার মুখের হাড় ভেঙে গেছে, ডান চোখ নষ্ট হয়ে গেছে এবং ব্রেইনের গুরুতর ক্ষতি হয়েছে।

২০১৬ সালে সরকারি ভিসায় পাম অয়েল বাগানে কাজ নিয়ে মালয়েশিয়ায় যান মাহবুব। পাম অয়েল বাগানের ভিসা শেষ হলে অবৈধ হয়ে যান তিনি। তবে সরকারের রিক্যালিব্রেশন প্রক্রিয়ায় বৈধ হয়েছেন।

 

মাহবুবের ৩ মেয়ে ও স্ত্রী থাকেন গাজীপুর বোর্ডবাজারে একটি ভাড়া বাসায়। পুরো সংসার নির্ভরশীল মাহবুবের ওপর।

এখন পর্যন্ত হাসপাতালে মাহবুবের বিল হয়েছে ৪৮ হাজার রিঙ্গিত, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২ লাখ টাকা। হাসপাতালের বিলের অংক আরও বাড়বে। তবে এ টাকা পরিশোধ না করলে তার চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া মুশকিল। শুরুতেই আইসিইউতে রাখা হলেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে এইচডিডব্লিউতে রাখা হয়। চিকিৎসা অব্যাহত না রাখলে তাকে বাঁচানো সম্ভব নাও হতে পারে বলে চিকিৎসকরা ইতোমধ্যে জানিয়েছেন।

 

মালয়েশিয়ায় থাকা মাহবুবের ভাতিজা আনোয়ার হোসেন জানান, মাহবুব সাব-এজেন্ট নেওয়া এক মালয়েশিয়ানের অধীন কাজ করতেন। শুরুর দিকে সেই এজেন্ট কিছু সহযোগিতা করলেও এখন তিনি অপারগতা প্রকাশ করেছেন।

মাহবুবের স্ত্রী সিমা আক্তারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ৮ হাজার রিঙ্গিত (বাংলাদেশি ২ লাখ টাকা) সহায়তা করেন, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।

 

হাসপাতালের বিল পরিশোধ ও মাহবুবকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হলে উড়োজাহাজ ভাড়া ও আনুষঙ্গিক খরচ বাবত প্রায় ৭৫ হাজার রিঙ্গিত (বাংলাদেশি ১৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা) প্রয়োজন।

এ অবস্থায় সরকারের বিশেষ উদ্যোগ আর বরাদ্দের আশায় আছে মাহবুবের পরিবার। পাশাপাশি দেশ ও প্রবাসে থাকা বিত্তবানদের কাছেও সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

 

 

শুক্রবার কয়েকজন প্রবাসী যোগাযোগ করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মাহবুবের ভাতিজা আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, সবার একটু সহযোগিতায় হয়তো আমার চাচা বেঁচে ফিরবেন। তার অপেক্ষায় রয়েছে পুরো পরিবার।

মাহবুব আলমকে সহায়তা করা যাবে এই অ্যাকাউন্টে- 162143181252, Anowar Hossain, May bank.