নোবেলজয়ী ইউনূসের বিরুদ্ধে নিপীড়ন বাড়িয়েছে বাংলাদেশ-ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন

ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফাইল ছবি

ড. মুহাম্মদ ইউনূস যখন ২০০৬ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন, তখন দেশবাসী এই বিজয়কে রাজপথে উদযাপন করেছেন। ১৯৮০ এর দশকে ছোট পরিসরে উচ্চ সুদে দরিদ্রদের জন্য ক্ষুদ্রঋণ প্রবর্তন করেছিলেন ড. ইউনূস। তিনি এই পথের প্রবর্তন করায় বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্রতা থেকে তুলে আনতে সহায়ক হয়েছে। দেশে ও বিদেশে তিনি হয়ে ওঠেন বহুল প্রিয় নাম। কিন্তু দেশে বিষয়টি পাল্টে গেছে। বর্তমান বাংলাদেশে তাকে উদযাপন করার চেয়ে বেশি শিকারে পরিণত হতে হয়। এ মাসে তাকে নিজের ব্যবসার বিষয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে উপস্থিত হতে হবে দুর্নীতি দমন কমিশনে। তার সহযোগীদের ক্রমবর্ধমান তালিকার সঙ্গে তিনিও দেশত্যাগে বিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়ার ঝুঁকিতে আছেন। এক দশক ধরে তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী যে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন, সেই ধারাবাহিকতার সর্বশেষ ঘটনা হলো দুর্নীতি দমন কমিশনে ড. ইউনূসকে উপস্থিত হতে সমন জারি।

 

সরকার দাবি করে, তাদের লক্ষ্য হলো দুর্নীতির মূলোৎপাটন করা। কিন্তু ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে তদন্ত এটাই সাক্ষ্য দেয় যে, বাংলাদেশে একনায়কতন্ত্রের উত্থান ঘটছে। যা দেশের নাগরিক সমাজের জন্য স্থান ক্রমশ সংকুচিত করছে। ড. ইউনূসের পরিণতি এটাই ইঙ্গিত দেয় যে, বাংলাদেশে সামাজিক উদ্যোগ এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৭০ এর দশক থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমিক সরকারগুলো উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের মতো সংগঠনের কাজগুলোকে গ্রহণ করেছিল। কিন্তু এক পর্যায়ে এসে তারা উদ্বিগ্ন হতে শুরু করে যে, এ ধরনের গ্রুপ নিজেদের মতো খুব বেশি শক্তি সঞ্চয় করছে।

 

নরওয়ের একটি ডকুমেন্টারিতে অভিযোগ করা হয় যে, ড. ইউনূস ১৯৯০ এর দশকে নরওয়ের একটি এইড এজেন্সির ডোনেশন অন্যখাতে স্থানান্তর করেছেন। কিন্তু নরওয়ে সরকার তদন্তে এই অভিযোগের কোনো সত্যতা পায়নি। ওই ডকুমেন্টারি প্রকাশের কমপক্ষে এক দশক আগে ড. ইউনূসের ব্যবসার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী হয়তো এ জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে থাকবেন যে, ড. ইউনূস কার্যকর এক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে পারেন।

 

 

কারণ, তিনি ২০০৭ সালে সামরিক শাসনের সময়ে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য রাজনীতিতে এসেছিলেন। এটা সেই সামরিক শাসনের সময়, যারা শেখ হাসিনাকে জেলে পাঠিয়েছিল।

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ- তিনি ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছেন। গরিবের রক্তচোষা বলে নিন্দিত করেছিলেন এবং গ্রামীণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ড. ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণ ব্যবসা, এমনকি তার ব্যক্তিগত আর্থিক বিষয়ে তদন্ত চালু করেন। শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতাকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরেন, ড. ইউনূসকে নিয়ে তার সন্দেহ গভীর হয়। ড. ইউনূসের বাধ্যতামূলক অবসরের বয়স ৬০ পেরিয়ে গেছে- এই অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ২০১১ সালে সরিয়ে দেয় সরকার। ওই সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বয়স ছিল ৭০ বছর। তিন বছর পরে এই ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের পুরোটাই দখল করে সরকার। বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির অভিযোগ উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংক ১২০ কোটি ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি প্রত্যাহার করে। ফলে ২০১২ সালে পদ্মা নদীতে সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা সাময়িক সময়ের জন্য বিচ্যুত হয়।

পরে প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন যে, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরিয়ে দেয়ার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে ড. ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রে তদবির করেছেন, যাতে তারা পদ্মা সেতুতে অর্থ দেয়া থেকে বিশ্বব্যাংককে নিরুৎসাহিত করে। চীনের সহায়তায় নির্মিত পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সময় এ বছরের আরও আগে এই অভিযোগকে দ্বিগুণ করেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশিদেরকে তিনি বলেন যে, ড. ইউনূসকে পদ্মা নদীতে চুবানো উচিত।

সরকার বলেছে, বিশ্বব্যাংক কেন এ প্রকল্প থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিল, তার তদন্ত করবে তারা। এর সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন ড. ইউনূস। জুলাই মাসে সরকার আলাদা একটি তদন্ত শুরু করে এই অভিযোগে যে, অলাভজনক প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মস্মাৎ করেছেন ড. ইউনূস। গ্রামীণ টেলিকম এবং ড. ইউনূস এ অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেছেন। তখন থেকে এই তদন্ত আরও বিস্তৃত হয়েছে। গ্রামীণ নাম ব্যবহার করে এমন অন্য কোম্পানি এবং সংগঠনের বিরুদ্ধে এই তদন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এমনকি বিদেশে আছে এমন কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও তদন্ত হচ্ছে। আগামী বছর বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার বিষয়ে শেখ হাসিনা উদ্বিগ্ন। এ কারণেই তিনি সাম্প্রতিক তদন্ত করাচ্ছেন বলে এর সময়কাল বলে দিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, আগস্ট থেকে হাজার হাজার সমালোচক ও বিরোধী দলীয় সদস্যের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগে মামলা করেছে সরকার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল মনে করেন ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক খ্যাতি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি এই শাসকগোষ্ঠীর কোনো বিকল্প খোঁজে তাহলে এই প্রক্রিয়ায় ড. ইউনূস হতে পারেন খুবই গুরুত্বপূর্ণ- যদি তিনি তা চান। কিন্তু ড. ইউনূস ২০০৭ সালে রাজনীতিতে তার নিষ্ক্রিয় পদার্পণের পর এমন কোনো প্রবণতা দেখাননি। তবে শেখ হাসিনা মনে হচ্ছে ঝুঁকি নিতে নারাজ।

প্রকাশকঃএম এইচ, কে , উপদেষ্টা সম্পাদক,জাহাঙ্গীর আলম জাবির, ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃনির্বাহী সম্পাদকঃ বার্তা সম্পাদকঃ সাইদুর রহমান মিন্টু এএনবি২৪ ডট নেট নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকে । তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি anb24.net is one of the most popular Bangla News publishers. It is the fastest-growing Bangla news media that providesective news within the accurate and obj shortest poassible time.anb24.net intends to cover its reach throughout every district of the country, also global news of every segment such as politics, economics, sports, entertainment, education, information and technology, features, lifestyle, and columns anbnewsbd@gmail.com /mahamudulbd7@gmail.com mahamudul@anb24.net