একটি অসহায় পরিবার একটি ঘরের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে।খোলা আকাশের নিচে চলছে তাদের বসবাস।
গরিব পরিবারে জন্ম হওয়ায় ইচ্ছা থাকলেও বেশিদূর পড়ালেখা করতে পারেননি নাঈম ও খাদিজা আক্তার।তাদের বাবা আবুল বাশার ২০১৩ সালে চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করে।বাবার মৃত্যুর পর নাঈম হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়ালেখা অবস্থায় ধরতে হয়েছে সংসারের হাল।
বাবা মারা যাওয়ায় পরপরই মা নাসরিন আক্তার ব্রেইন ষ্টোক ও প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। ঘরবিহীন অভাবের সংসারে কোন রকম বেঁচে আছেন তারা। (১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২)বুধবার কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের কালীকৃষ্ণ নগর গ্রামের বড় বাড়িতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় তাদের জীবনযাপনের করুণ দশা। পিতার মৃত্যুর পর প্রাপ্য সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত রেখেছে চাচা আব্দুস সালাম ও আব্দুর রশিদ।বাড়ির একটি পুরাতন ভাঙা ঘরে কোন রকম বসবাস করে আসছিল অসহায় পরিবারটি। কিন্তু কয়েকদিন ধরে প্রচুর বৃষ্টিপাত ও বাতাসে রাতের আঁধারে পুরাতন ঘরটি একেবারে ভেঙে পড়ে যায়। চাচার ঘরে আশ্রয় চেয়েও ঠাঁই পায়নি। অথচ দাদার পাকাভবন জোর করে দখল করে রেখেছে চাচারা।
হাফেজ নাঈম মানুষের জমিতে শ্রম দিয়ে ও টিউশনি করে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে কোন রকম সংসার চলছে। যে দিন কাজ করতে না পারে সে দিন অনাহারেই থাকতে হয় তাদের।
হাফেজ নাঈম জানান,আমাদের ঘর না থাকায় বোন খাদিজা আক্তারের জন্য বিয়ের প্রস্তাব কেউ নিয়ে আসে না। এছাড়া আমার মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছি না।
অসুস্থ মা নাসরিন আক্তার বলেন,স্বামীর মৃত্যুর পর খুব কষ্টে দিনকাল যাইতাছে। ‘হুনছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের গরীবদের নাকি ঘর দেয়। যদি আমি একটা ঘর পাইতাম তাইলে বাকি জীবনডা সুখে কাটাইতে পারতাম। বাইরে আর থাকতে হইত না।’আমডা কেমন আছি ইউএনও স্যার যদি একবার এসে দেখে যাইতেন, সরকারিভাবে একটি ঘর দিত তাইলে আমরা চির ঋণী থাকতাম।’
বোন খাদিজা আক্তার বলেন, ‘আমার এক মাত্র ভাইয়ের রোজগারে আমাদের জীবন চলে। থাহি বাইরে খুব কষ্টে।চাচাদের ঘরেও ঠাঁই পাইনা।
বাকশীমূল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল করিম বলেন,আমি খবর নিয়েছি পরিবারটি আসলেই অসহায়।তবুও সরেজমিনে গিয়ে দেখে ইউএনও স্যারকে জানাবো।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হালিমা খাতুন বলেন,পরিবারটি খোঁজখবর নিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।পরিবারটি দরখাস্ত করলে আমি বিষয়টি দেখব।’