ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী খালেদা জিয়া। তাকে যদি আটক রাখা যায় তাহলে তারা (সরকার) অবৈধ শাসন টিকিয়ে রাখতে পারবে। খালেদা জিয়ার কিছু হলে জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না
বিএনপি চেয়ারপার্সন চিকিৎসাদীন খালেদা জিয়ার জীবনে কোনো “হুমকি” এলে পরিণতি “শুভ হবে না” বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, “আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জীবনের কোনো হুমকি এলে দেশের জনগণ এই ঘৃণ্য লুটেরা সরকারকে কখনো ক্ষমা করবে না।”
সোমবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে সরকারের প্রতি এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, “খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সু-চিকিৎসা নিয়ে তার পরিবার সরকারের কাছে একাধিকবার আবেদনই করেনি, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথাও বলেছে। দেশের মানুষ এত বোকা নয়। তারা বুঝেছে শেখ হাসিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী খালেদা জিয়া। তাকে যদি আটক রাখা যায় তাহলে তারা (সরকার) অবৈধ শাসন টিকিয়ে রাখতে পারবে। আজকে তাই তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে চায়। দেশের মানুষ পরিষ্কার জানিয়ে দিতে চায়, খালেদা জিয়ার কিছু হলে জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।”
তিনি বলেন, “আজ সকালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত বোর্ডের চিকিৎসকরা পরিষ্কার করে বলেছেন, দেশে যা যা করার দরকার করা হয়েছে সবই করা হয়েছে, এখন তাকে সুস্থ করতে হলে বিদেশে না নেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই।”
আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ জনবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহসচিব বলেন, “খালেদা জিয়া দেশে সহনশীল রাজনীতি সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি সংসদীয় গণতন্ত্র কায়েম করেছেন। আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৬ দিন হরতাল দিয়েছে। আজকে তারা তা মানছেন না। এই আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়। এরা ফ্যাসিস্ট।”
ফখরুল বলেন, “আজকে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায় দিয়ে বিএনপির ১৫ জন নেতাকে ৪ বছর করে সাজা দিয়েছে। গতকাল আরও ১৫ জন সাবেক ছাত্রনেতাকে জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তারা মনে করছে এদের আটক রাখলে বিএনপিকে প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। প্রতিটি সাজার বিরুদ্ধে হাজার হাজার কর্মী সৃষ্টি হচ্ছে। বিএনপি হচ্ছে ফিনিক্স পাখির মত। এগুলো করে সরকার ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে পারবে না।”
‘কথা শুনলে মনে হয় আমরা রাজতন্ত্রে বাস করছি’
রিজার্ভের পতন নিয়েও কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, “এই সরকার রিজার্ভের পরিমাণ কমাতে কমাতে এমন জায়গায় নিয়ে গেছে যে, আর কয়েকদিন পরে আমদানি করার আর অর্থ থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী খুব ধমক দিয়ে বলেছেন যে, তাহলে বন্ধ করে দেই, বন্ধ করে দেই বিদ্যুৎ, বন্ধ করে দেই পানি। কথা শুনলে মনে হয় আমরা রাজতন্ত্রে বাস করছি। আমাদের মালিক একজন, সেই মালিক হচ্ছেন শেখ হাসিনা। এটা কোনো রাজতন্ত্রের দেশ নয়। এর মালিক জনগণ।”
তিনি বলেন, “দেয়ালের লিখন পড়েন। এখনো বুঝতে পারছেন না আপনাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে। ইতিহাস ভুলে যাবেন না। এভাবে দেশ কেউ চালাতে পারে না। হিটলার পারেনি, মুসোলিনি পারেনি, আইয়ুব খান পারেনি, ইয়াহিয়া খান পারে নাই। এ দেশে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও পারে নাই, মঈন উদ্দিন, ফখরুদ্দীনের সরকারও পারে নাই, আপনারাও পারেন নাই একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে।”
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, শামুসজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।