এক ধাক্কায় বদলে গেল বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সেমির সমীকরণও

সুপার টুয়েলভের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ভারত হেরে যাওয়ায় এক ধাক্কায় বদলে গিয়েছে গ্রুপ-২ এর সেমিফাইনালে যাওয়ার হিসেব নিকেশ। সেই সঙ্গে হয়েছে পয়েন্ট তালিকায় রদবদলও। বাংলাদেশ ও ভারতকে টপকে এক লাফে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ওঠে এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এতে করে ভারত নেমে গেছে দ্বিতীয় স্থানে। আর বাংলাদেশের অবনমন হয়েছে তৃতীয় স্থানে।

 

গ্রুপ-২ এ সব দলের ৩টি করে ম্যাচ হয়ে গেছে। যেখানে সবাইকে পেছনে ফেলে শীর্ষে ওঠেছে প্রোটিয়ারা। প্রোটিয়াদের একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ায় ৩ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার পয়েন্ট ৫। তাদের নেট রানরেট এখন +২.৭৭২।

দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে যাওয়ায় পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে নেমে এসেছে ভারত। ৩ ম্যাচে রোহিত শর্মাদের পয়েন্ট ৪। তাদের নেট রানরেট +০.৮৪৪। পয়েন্ট তালিকায় তৃতীয় স্থানে বাংলাদেশ। ৩ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের পয়েন্টও ৪। ভারতের সমান পয়েন্ট হলেও নেট রানরেটে পিছিয়ে বাংলাদেশ। সাকিবদের নেট রান রেট -১.৫৩৩।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে হেরে যাওয়ায় ৩ ম্যাচ খেলে ৩ পয়েন্ট জিম্বাবুয়ের। তারা রয়েছে পয়েন্ট তালিকার চতুর্থ স্থানে। পাকিস্তানকে হারিয়ে চমকে দেয়া ক্রেগ আরভিনদের নেট রান রেট -০.০৫০। নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে পাকিস্তান জিতলেও পয়েন্ট তালিকায় তাদের জায়গার কোনও পরিবর্তন হয়নি। অর্থাৎ পাঁচ নম্বরেই রয়েছেন বাবররা। ৩ ম্যাচ খেলে পাকিস্তানের পয়েন্ট ২। তাদের নেট রানরেট +০.৭৬৫।

অন্যদিকে নেদারল্যান্ডস ৩ ম্যাচ খেলে ৩টিতেই হেরেছে। বৃষ্টির জন্য তাদের কোনও ম্যাচ বাতিল হয়নি। তাদের পয়েন্ট শূন্য। নেট রানরেটেও সব থেকে পিছনে তারা। নেদারল্যান্ডসের নেট রান রেট -১.৯৪৮।

সেমিতে উঠতে হলে যা করতে হবে গ্রুপ-২ এর দলগুলোকে

ভারত তৃতীয় ম্যাচে এসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে হেরে গেলেও সেমিফাইনালে যাওয়ার রাস্তাটা এখনো নিজেদের হাতেই ধরে রেখেছে। বাকি দুটি ম্যাচে (বাংলাদেশ এবং জিম্বাবুয়ে) জিতলে ভারতের পয়েন্ট হবে আট। একমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকার পয়েন্ট আট বা বেশি হতে পারে। ফলে নিজেদের বাকি দুটি ম্যাচ জিতলেই সরাসরি সেমিফাইনালে চলে যাবে ভারত। সেক্ষেত্রে বাদ পড়ে যাবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান।

আর ভারত যদি একটি ম্যাচে হেরে যায় তাহলেই তৈরি হবে বড় সমস্যা। ভারত যদি একটি ম্যাচ হারে ও একটিতে জয় পায় সেক্ষেত্রে তাদের পয়েন্ট হবে ৬। সেক্ষেত্রে ভারত, বাংলাদেশ (ভারত এবং পাকিস্তান), পাকিস্তান (দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশ) এবং দক্ষিণ আফ্রিকার (পাকিস্তান এবং নেদারল্যান্ডস) পয়েন্ট ছয় বা তার বেশি হতে পারে।

দক্ষিণ আফ্রিকা যদি পাকিস্তানকে হারিয়ে দেয় বা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হেরে যায় তাহলে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাবেন বাবর আজমরা। পাকিস্তান যদি দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারায় এবং নেদারল্যান্ডসকে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা তাহলে ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং দক্ষিণ আফ্রিকার পয়েন্ট ছয় বা তার বেশি থাকতে পারে।

তবে প্রোটিয়ারা নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে দিলেই সাত পয়েন্ট হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে সেমিতে চলে যাবেন। অর্থাৎ দ্বিতীয় স্থানের জন্য তিনটি দলের লড়াই হবে। ভারত যদি বাংলাদেশের কাছে হেরে যায় এবং বাংলাদেশ যদি পাকিস্তানের কাছে হেরে যায় তাহলে ওই তিন দলের পয়েন্ট হবে ছয়। নেট রানরেটের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে যে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে কোন দল সেমিতে যাবে।

আপাতত যা নেট রানরেট, তাতে এগিয়ে আছে ভারত। তবে ভারত এরকম অঙ্কের জটিলতায় যেতে চাইবে না। বরং বাকি দুটি ম্যাচ জিতে সেমির টিকিট কাটতে চাইবেন রোহিতরা। তবে বাংলাদেশ এবং জিম্বাবুয়ের থেকে ধারেভারে অনেক এগিয়ে ভারত। ফলে ভারতের সামনে অঙ্কের এত জটিলতা তৈরির সম্ভাবনা কম।

সেমিফাইনালে যাওয়ার কঠিন এই সমীকরণ অবশ্য নানানভাবে নতুন মাত্রা নিতে পারে। সরল অঙ্কের খাতায় প্যাচ লাগিয়ে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে ম্যাচের বৃষ্টি। ওই ম্যাচ থেকে দু’দলই একটি করে পয়েন্ট পেয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকা-নেদারল্যান্ডসের অ্যাডিলেড ম্যাচে, পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকার সিডনি ম্যাচে বা ভারত-জিম্বাবুয়ের মেলবোর্ন ম্যাচে বৃষ্টি হানা দিলে কার কপালে কী ঘটবে বলা মুশকিল।