একটি সুন্দর ও কল্যাণকর সমাজ গঠনে নারী-সমাজের করণীয় ও ইসলাম

গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির৷।
প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে এগিয়ে  নিতে হলে নারী সমাজের  নিরাপত্তা  নিশ্চিত  করতে হবে। আমাদের দেশে নারীরা কতটুকু  নিরাপদ?  মেয়ে তার বাবা, বোন তার ভাই কিংবা  স্ত্রী তার স্বামীর হাত ধরে বাইরে  বেড়াতে যাবেন, এটা স্বাভাবিক । বাবা তার মেয়েকে , ভাই তার বোনকে, স্বামী  তার স্ত্রীকে সর্বোচ্চ  নিরাপদে রাখার চেষ্টা  করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু  বাবার কাছ থেকে  মেয়েকে, ভাইয়ের  কাছ থেকে  বোনকে কিংবা  স্বামীর কাছ থেকে  স্ত্রীকে ছিনিয়ে  নিয়ে  নৈতিকতাহীন কিছু  অমানুষ  পৈশাচিক  নির্যাতন, শ্লীলতাহানি কিংবা  ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটাবে। একের পর এক এ জাতীয় সংবাদ  প্রকাশ পাবে ,পাচ্ছে। ঘটনার বর্বরতায় রীতিমতো  হতবাক দেশের সকল মানুষ,কিন্তু  এভাবে আর কতদিন?
গত কিছুদিন যাবত পত্রপত্রিকা, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রধান শিরোনাম ধর্ষণ, নির্যাতন, খুন, বেশ কয়েকটি ধর্ষণ, নারী  নির্যাতন,নিগ্রহের ঘটনা  প্রকাশ পেয়েছে । একটি  ঘটনার  রেশ কাটতে না কাটতে গণমাধ্যমে  আসছে নতুন  আরেক ঘটনা । অপরাধের ধরন, মাত্রা , ভয়াবহতা, অমানবিকতা  ও নিষ্ঠুরতায় বিবেকবান মানুষ  হতবাক, হতবিহ্বল। রাত- বিরাতে নয়- দিন- দুপুরে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। নিজ ঘরে, বাইরে, রাস্তাঘাটে, যানবাহনে, কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।  বর্তমানে নতুনমাত্রা যোগ হচ্ছে দলবদ্ধ  ধর্ষণ এবং ধর্ষণের ঘটনা ধর্ষক কিংবা  তার সহযোগী  দ্বারা মোবাইলে  ভিডিও  করা। পরবর্তী সময়ে  ইন্টারনেটে  ছড়িয়ে  দেওয়ার  ভয় দেখিয়ে পুনরায় ধর্ষণ কিংবা  টাকা দাবি করা। সভ্য সমাজে এসব অসভ্যদের বিচরণ চলতে পারে না।
 আমাদের প্রিয় জন্মভূমির গ্রাম থেকে শহরে, নারী নির্যাতন, নারী ধর্ষণ, নারী অপহরণ করে ধর্ষণের পর লাশ রাস্তায় অথবা নদীতে ফেলে দেয়ার বর্বর নির্মম চিত্র।  সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীকে আটকিয়ে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের পর নিরাপদে ধর্ষকরা পালিয়ে  যায়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে স্বামী-স্ত্রী দু’জনে প্রাণে বেঁচে যায়। তবে ক্ষতি বা সর্বনাশ যা হওয়ার তাতো হয়েই গেছে। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই নোয়াখালীতে স্বামীর সামনে গৃহবধূকে নগ্ন করে লাঞ্ছিত করার খবরে গোটা দেশ গর্জে ওঠে। সর্বোচ্চ আদালত, কলেজ কর্তৃপক্ষ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বিচার বিভাগীয় তদন্ত দল ইতোমধ্যে সরেজমিন কলেজ ক্যাম্পাস, ছাত্রাবাস পদিরর্শন করেছেন। কলেজের অধ্যক্ষের সাথে দেখা করেছেন। রিপোর্ট অতিদ্রুত আসবে বলে জানা যায়।
ঘটনার পরদিনই ধর্ষিত নারীর স্বামী বাদী হয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করেছেন। আসামি এ পর্যন্ত ৮ জন ধরা পড়েছে। কোর্টে ইতোমধ্যে দুইবারে ৮ জনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আশা করি, বিচার দ্রুত হবে। আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। দেশের  সকল  রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন  এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে, ফাঁসির দাবি করেছে।
দেশের শহর থেকে শুরু করে মফস্বল শহর পর্যন্ত স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মসজিদ-মাদরাসা ও এলাকার সচেতন সমাজ ধর্ষণকারীদের ফাঁসির দাবিতে মিছিল-মিটিং অব্যাহত রেখেছে। মানুষকে সচেতন করা অভিভাবকদের অন্যতম দায়িত্ব। এরি মধ্যে আবারো সিলেটে আরেকটি ধর্ষণের খবর টেলিভিশনে দেখা গেল। আশ্চর্যের বিষয়, মা-মেয়ে ধর্ষিত হয়েছে। কী পৈশাচিক ঘটনা। দুই ধর্ষক ধরা পড়েছে। ভালো কথা। ধর্ষণের ঘটনা কিন্তু একটা-দুইটা কিংবা তিনটা নয়।
পত্রপত্রিকায় প্রকাশ, গত ৯ মাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৯৭৫টি। এ সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২০৮ নারী। এছাড়া ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন ৪৩ জন এবং আত্মহত্যা করেছেন ১২ নারী। এছাড়া ৬২৭ শিশু এ সময়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে, ২০টি বলাৎকারের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া প্রতিদিনই ৫৬ হাজার বর্গমাইলের আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের কোনো না কোনো স্থানে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। ৭২ বছরের বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করেছে এক পাষন্ড। এ দুঃখ রাখার জায়গা কোথায়? মনে হয় এ পাষন্ডের মা-বোন নেই বা কোনো মায়ের গর্ভে সে জন্ম নেয়নি। তার দ্রুত বিচারের মাধ্যমে প্রকাশ্যে জনতার সামনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর করার জোর দাবি করছি।
অপরাধী কিশোরদের গ্যাং কালচার ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করছে। দেশের মানুষ কিন্তু এখনো ভুলে যায়নি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে  ধর্ষণের সেঞ্চুরি করার ঘটনা। তাও আবার প্রকাশ্যে প্রচার করার দুঃসাহসও দেখিয়েছিল।  বিচার হয়েছিল কিনা, আমার জানা নেই। এদের শাস্তি প্রকাশ্যে হলে মানুষ স্বস্তি পেতো। এ কাজে অন্য কে অগ্রসর হতে সাহস পেত না।
মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষ সৃষ্টি করে তাদের পথচলারও পন্থা বাতলিয়ে দিয়েছেন। মানুষের বংশপরম্পরা বৃদ্ধি পাবে ছেলেমেয়ের বিবাহের মাধ্যমে ঘর-সংসার করার ফলে। অবৈধ যৌনকর্ম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ইসলামে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া রাষ্ট্রের অন্যতম প্রশাসনিক কাজ। আমাদের দেশের সরকার ধর্ষণের ব্যাপারে কি শক্ত হাতে ব্যবস্থা নেবেন? সমাজকে কলুষমুক্ত করার পদক্ষেপ নেয়ার সময় এখনই। দেরি করার কোনো সুযোগ নেই। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের শাস্তি কার্যকর করলে, এদেশ মারাত্মক ব্যাধি থেকে রক্ষা পাবে।
যারা ধর্ষণ, রাহাজানি, খুন, দুর্নীতি, সামাজিক অপরাধ করে বেড়াচ্ছে,তাদেরও কিন্তু আশ্রয়দাতা-প্রশ্রয়দাতা রয়েছে। তাদেরও ধরা ও বিচার করা আমাদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের আওতায় পড়ে। এদের ধরতে বা শাসন করতে না পারলে সমাজের এই জঘন্য অপরাধ কালচার নির্মূল করা যাবে না। অপরাধ কালচার নির্মূল করা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে আনতে হবে। ১৭ কোটি মানুষের এই বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধশালী সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের পরিবারকে আদর্শ পরিবার হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে অনেক কাজ এগিয়ে যাবে। প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় যুবকদের সংগঠিত করে তাদের আদর্শবান করে গড়ে তোলার ব্যবস্থা আমাদেরই করতে হবে। প্রত্যেক অভিভাবককে দায়িত্ব নিতে হবে তাদের ছেলেমেয়েদের ছোটবেলা থেকেই আদব-কায়দা, আচার-ব্যবহার, চাল-চলন, ছোটদের সাথে স্নেহের ব্যবহার, বড়দের সাথে শ্রদ্ধার আচার-আচরণ করার শিক্ষা পারিবারিকভাবে দিতে হবে। স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসা-মসজিদে বিশেষভাবে শিক্ষার ব্যবস্থা করা অতি জরুরি। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিলে সহজেই সামাজিক শৃঙ্খলা আনা সম্ভব। ধর্ষণসহ সামাজিক বিপর্যয়ের যাবতীয় পথ বন্ধের ব্যবস্থা করা একান্তই প্রয়োজন। যেমন  অশ্লীল সিনেমা, পর্নোগ্রাফি পত্রপত্রিকা, অবাধ মেলামেশা, আকাশ-সংস্কৃতির সয়লাব বন্ধসহ প্রতিবেশী দেশের সিরিয়াল কালচার বন্ধ করতে হবে।
আমাদের প্রতিদিনের টেলিভিশন, পত্রপত্রিকায় যেভাবে অশ্লীল কথাবার্তা, ধর্ষণের খবর, ছবি, বিবস্ত্রকরণের ভাইরাল দৃশ্য প্রকাশ্যে দেখানোর কালচারে সামাজিক, পারিবারিক সম্পর্কের বন্ধন ঢিলা হয়ে পড়েছে। একজন পিতা, নানা-দাদার কাছে যখন উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা পত্রপত্রিকা, টেলিভিশন দেখে জিজ্ঞেস করে ঐ সমস্ত খবরের কথা, তখন বিব্রত হওয়া ছাড়া গতি থাকে না।
এবারের সিলেট, নোয়াখালী, ঢাকা, কুমিল্লা,  কুষ্টিয়া ও পটিয়ার ঘটনাগুলোর ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণে পুলিশ ও র‌্যাবের অভিযান প্রমাণ করেছে, তারা যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে তবে ধর্ষক গংদের খুঁজে বের করা মোটেই অসম্ভব নয়। আমরা পুলিশ-র‌্যাব বাহিনীর ত্বরিত ব্যবস্থা নেয়াকে অভিনন্দন জানাই। সাথে সাথে তাদের জনগণের বন্ধু হিসেবে জনগণের টাকায় তাদের বেতন ভাতা হয়, বিবেচনা করে দলের ঊর্ধ্বে উঠে, প্রশাসনিক যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে আসল দোষীদের আইনের কাছে দ্রুত সমর্পণ করে বিচারের আওতায় আনার কাজ করতে হবে।
বিচার বিভাগকে কারো দিকে না তাকিয়ে ন্যায়বিচার   দ্রুত করে প্রকাশ্যে  ঐসব পাপী, পাষন্ড, অমানুষিক আচরণকারীদের বিচার করা গেলেই সামাজিক অনাচার দূর করা সম্ভব। আইনের কোনো ফাঁকফোকর দিয়ে যাতে এরা পার পেতে না পারে, তার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে।
পজিটিভ খবর,  একটি মানবিক এবং বৈষয়িক উন্নয়ন লক্ষ করা যায়। যেমন কোনো ধর্ষণের মামলায় সেখানকার আইনজীবীরা ধর্ষকের পক্ষে দাঁড়াননি। আমি বলবো, এটা সামাজিক ও মানবিক উন্নয়ন হয়েছে। আমরা আসলেই আমাদের এই জন্মভূমিকে দায়িত্বশীলরা একমত হয়ে অসামাজিক সব কাজের প্রতিরোধ করার উদ্যোগ নিলে এই দেশকে সোনার বাংলা করা খুব একটা কঠিন কাজ হবে না। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শিশুদের এক সভায় এ জাতীয় অন্যায়-অপকর্মের কঠিনভাবে দমন করার ঘোষণা দিয়েছেন এবং মাননীয়  প্রধানমন্ত্রী  আইন সংশোধনের  মাধ্যমে  ধর্ষণের শাস্তি  মৃত্যুদন্ড করার নির্দেশ প্রদান করেন। আমি মাননীয়  প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনাকে আন্তরিক মোবারকবাদ এবং  ধন্যবাদ  জানাই। আর দেরি না করে সব ভেদাভেদ ভুলে আসুন, আমরা ১৭ কোটি মানুষের প্রতিনিধি হয়ে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশকে দুনিয়ার মধ্যে একটি আদর্শ অনুসরণীয়-অনুকরণীয় দেশ হিসেবে গড়ে তুলি। মহান আল্লাহ আমাদের সাহায্য করবেন। দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ এভাবেই সম্ভব।আরেকটি  কথা, নারীর  সম্ভ্রম রক্ষায় – নারীদের পাশাপাশি পুরুষদেরও কর্তব্য রয়েছে । যেমন, গায়রে মাহরাম নারীর প্রতি দৃষ্টিপাত না করা। ইরশাদ  হয়েছে , ( হে নবী) ঈমানদার পুরুষদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং  তাদের  লজ্জাস্থানের হেফাজত  করে। এটাই তাদের  জন্য  উত্তম । ( সূরা  নূরঃ ৩০) । গায়রে মাহরাম নারী  থেকে  কিছু  চাওয়ার  প্রয়োজন হলে  পর্দার অন্তরাল থেকে  চাইবে। ইরশাদ  হচ্ছে,”  তোমরা তাদের  ( নবী পত্নীদের) নিকট কিছু  চাইলে পর্দার আড়াল থেকে  চাও। এই বিধান তোমাদের ও তাদের  হৃদয়ের জন্য  অধিকতর পবিত্রতার কারণ।” ( সূরা আহযাবঃ৫৩)
নারীদের কাছে যাতায়াত  করা থেকে  বিরত থাকা । ইরশাদ  হয়েছে, ওকবা ইবনে  আমের জুহানি রাঃ এর সূত্রে বর্ণিত – রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি  ওয়া  সাল্লাম ইরশাদ  করেন, ” তোমরা  নারীদের নিকট যাওয়া  থেকে  বিরত থাক। এক আনসারি সাহাবি আরজ করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু  আলাইহি  ওয়া  সাল্লাম স্বামী  পক্ষীয় আত্মীয়  সম্পর্কে  আপনি কী বলেন?  তিনি  বললেন, সে তো মৃত্যু!”( বুখারি শরীফঃ৯/২৪২, মুসলিম শরীফ, হাদিসঃ২১৭২)। এই হাদীসে বেগানা নারী -পুরুষের  একান্ত অবস্থানকে নিষেধ  করা হয়েছে এবং  এ প্রসঙ্গে স্বামী  পক্ষীয় আত্মীয় – স্বজন যেমন দেবর-ভাসুর ইত্যাদির সঙ্গে  অধিক  সাবধানতা অবলম্বন  অপরিহার্য  করা  হয়েছে । নারী  নির্যাতন রোধে এ ছিল প্রিয় নবী  সাল্লাল্লাহু  আলাইহি  ওয়া  সাল্লাম  এবং  ইসলামের ব্যবস্থা।আর দ্বিতীয়  ধাপ হচ্ছে, আইনের শাসন। ইসলামের আইনে প্রতিটি অপরাধের কার্যকরি শাস্তি  আছে । ধর্ষণেরও আছে কার্যকরি শাস্তি। নারীর  সম্ভ্রম নষ্টকারী   তথা নারীর প্রতি অবৈধ  যৌন নির্যাতনকারীর জন্য ইসলাম সর্বোচ্চ শাস্তির  বিধান  দিয়েছে। ইরশাদ  হচ্ছে, ” ব্যভিচারী পুরুষ  ও নারী; তাদের  উভয়কে একশটি বেত্রাঘাত কর।
আল্লাহর বিধান কার্যকর করণে তোমাদের  মনে যেন দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা  আল্লাহর  প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে  থাক। আর মুসলমানদের একটি  দল যেন তাদের  শাস্তি  প্রত্যক্ষ করে। “( সূরা নূরঃ২)।
পরিশেষে  বলতে চাই, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নারী – পুরুষের স্বাধীন ভাবে চলাফেরা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে । মানবতার ধর্ম ইসলামও নারীর মর্যাদা, অধিকার, নিরাপত্তা  এবং শিক্ষার কথা  বলে। আধুনিক  সমাজে নারী – পুরুষ নির্বিশেষে সবার মৌলিক অধিকার  সমান ও অভিন্ন। সামাজিক , রাজনৈতিক , অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক  পালাবদলে নারী  অপরিহার্য  অংশীদার। সুতরাং, নারী নির্যাতনের এই চিত্র  কোনোভাবেই কাম্য  নয়।
লেখকঃ গাজী  মুহাম্মদ  জাহাঙ্গীর  আলম  জাবির
ধর্মীয় লেখক, সংগঠক, আওলাদ ও খাদেমঃ হযরত শাহসূফী ফকির আবদুস সালাম রহঃ মাজার ও খানকা শরীফ- আনন্দপুর, বুড়িচং – কুমিল্লা