গতকাল জন কারবি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “সাধারণভাবে বলতে গেলে, আমরা ইয়েমেনে যুদ্ধের অবসান এবং মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে উত্তেজনা কমাতে সাহায্য করার জন্য যেকোনো প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যকার শান্তি চুক্তিকে আমেরিকা স্বাগত জানিয়েছে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কারবি বলেছেন, “আমরা ইয়েমেন যুদ্ধের অবসানে যেকোন উদ্যোগ এবং মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা নিরসনের পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই।”
গত বছর এই অঞ্চল সফরের সময় প্রেসিডেন্ট বাইডেন যে নীতির রূপরেখা দিয়েছিলেন তার মূল স্তম্ভ হলো প্রতিরোধের পাশাপাশি সংঘাতের অবসান এবং কূটনীতি।
এদিকে, ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট এই চুক্তিকে ইরানের জন্য রাজনৈতিক বিজয় এবং ইসরাইলের জন্য মারাত্মক বিপজ্জনক ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ইরান-বিরোধী আঞ্চলিক জোট গঠনের ক্ষেত্রে এই চুক্তি মারাত্মক বিপর্যয়।
ইসরাইলের আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদও এই চুক্তিকে ইসরাইলের জন্য বিপজ্জনক ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ইসরাইল ও সৌদি আরবের মধ্যকার এই চুক্তি ইসরাইল সরকারের পররাষ্ট্রনীতির জন্য মারাত্মক ব্যর্থতা। এছাড়া, ইসরাইলের সাবেক যুদ্ধমন্ত্রী বেনি গান্তজ ইরান-সৌদি চুক্তিকে ইসরাইলের জন্য উদ্বেগের কারণ বলে উল্লেখ করেন।
বিশ্লেষকরা বলেছেন, ইরানের সাথে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে সৌদি আরবের আকস্মিক পদক্ষেপ, ইসরাইলের সাথে দেশটির নাজুক কূটনৈতিক তৎপরতায় একটি নতুন, জটিল আবরণ যুক্ত করেছে।ইসরাইল তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির একটি স্বাভাবিকীকরণ চুক্তি হোক তাই প্রত্যাশা করে।
রিয়াদ এবং তেহরান শুক্রবার ঘোষণা করেছে যে সম্পর্ক ছিন্ন করার সাত বছর পর তারা দুই মাসের মধ্যে দূতাবাস এবং মিশন পুনরায় খুলতে যাচ্ছে।এছাড়া, ২০ বছরের বেশি সময় আগে স্বাক্ষরিত নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তিও বাস্তবায়ন করবে দুই দেশ।
চীন মধ্যস্থতার এই চুক্তি, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ইসরাইলে তীব্র সমালোচনা উস্কে দিয়েছে। তিনি এর আগে পরিষ্কার জানিয়েছিলেন যে তার মনোযোগের কেন্দ্রে রয়েছে ইরানের বিরুদ্ধে একটি আঞ্চলিক জোটের অংশ হিসেবে সৌদি আরবকে ইসরাইলের পক্ষে নিয়ে আসা।
সৌদি বিশ্লেষক আজিজ আলগাশিয়ান বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য জোটের অংশ হিসেবে সৌদি আরব ইসরাইলের প্রতি একচেটিয়াভাবে আগ্রহী ছিলো; এমন ধারণা কখনো গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে দেখা হয়নি।
ইসলামের পবিত্রতম স্থান মক্কা ও মদিনার অবস্থান সৌদি আরব। দেশটি দীর্ঘদিন ধরে বলেছে যে, ইসরাইলকে তাদের স্বীকৃতি দেওয়া নির্ভর করছে, ফিলিস্তিনিদের সাথে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের ওপর।
এই সপ্তাহে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং নিউ ইয়র্ক টাইমস প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যে রিয়াদ ইসরাইলের সাথে একটি চুক্তির বিনিময়ে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এবং বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচিতে সয়াহতার জন্য পোপনে চেষ্টা করছে।
বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌদি রাজনীতির বিশেষজ্ঞ উমর করিম বলেছেন, এই বছরের ইসরাইলি-ফিলিস্তিনি সহিংসতা, খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে প্রকাশ্য অগ্রগতিকে অসম্ভ করে তুলেছে।
সূত্র, আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়।